দৈনন্দিন জীবন

অনলাইন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ২০২৪

নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার নিয়ম 2024, অনলাইনে সঠিক নিয়মে নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন | Jonmo Nibondhon,অনলাইন জন্ম নিবন্ধন যাচাই, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন আবেদন, জন্ম নিবন্ধন আবেদন অবস্থা, জন্ম নিবন্ধন আবেদন পত্র প্রিন্ট, জন্ম নিবন্ধন সংশোধন, Bdris gov bd, জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম, জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফরম

কিভাবে অনলাইনে নতুন আপনার জন্ম নিবন্ধনের জন্য আপনি আবেদন করবেন?  অনলাইনে নতুন আপনার আপনার জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে আপনার কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন? আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফি কতো টাকা? জানুন অনলাইনে নতুন আপনার জন্ম নিবন্ধন এর আবেদন করার সঠিক নিয়ম,  নতুন নিবন্ধন করতে কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন এর ফি কত।

জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি হওয়ার আগে আপনার জন্ম নিবন্ধন হচ্ছে আপনার নাগরিকত্বের প্রথম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি বা প্রমাণপত্র। আপনার তথ্য আইন অনুসারে সরকারি খাতায় লিপিবদ্ধ করাকে বলে আপনার জন্ম নিবন্ধন। বর্তমানে আর হাতে লেখা আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন করা যায় না।  জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ মোতাবেক বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জন্য অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। 

অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন এর আবেদন করার ক্ষেত্রে কোন ধাপ ভুল হলে বা ভুল তথ্য দিলে পরবর্তীতে বিভিন্ন আপনি নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে  পারেন। এজন্য আপনাকে সঠিক নিয়মে আপনার আপনার জন্ম নিবন্ধনের  আবেদন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আজকের পোস্টে সহজ ও  সঠিক নিয়মে এবং কিভাবে নির্ভুলভাবে অনলাইনে আপনার আপনার জন্ম নিবন্ধনের  আবেদন করার নিয়ম তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। 

আপনার নতুন জন্ম নিবন্ধনের  জন্য আবেদন করবেন যেভাবে

অনলাইনে নতুন আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য প্রথমেই আপনাকে ভিজিট করতে হবে বাংলাদেশ জন্ম ও মৃত্যু এর ওয়েবসাইট (bdris.gov.bd) এখান থেকে আপনার জন্ম নিবন্ধনের সঠিক  ঠিকানা নির্বাচন করে পরবর্তী ধাপে যান। আপনার জন্ম নিবন্ধন এর ফর্মে নিবন্ধনকারী ব্যক্তির নাম, জন্মতারিখ, পিতা মাতার নাম এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য সকল তথ্য পূরণ করে আপনাকে আবেদন সাবমিট করতে হবে এবং প্রিন্ট কপি আপনাকে ইউনিয়ন পরিষদে জমা দিতে হবে। 

আবেদন ফর্ম  এর প্রথমে নিবন্ধনকারী ব্যক্তির তথ্য যেমন নাম ইংরেজিতে বাংলায় লিখতে হবে। জন্ম তারিখের বক্সে আপনাকে জন্ম তারিখ দিতে হবে।  জন্ম তারিখ দেওয়ার ফরমেট :- DD-MM-YYYY আপনাকে অনুসরণ করতে হবে। নিবন্ধনকারী ব্যক্তির লিঙ্গ নির্বাচন এবং পিতা-মাতার কততম সন্তান তা আপনাকে বাছাই করতে হবে। আর জন্মস্থানের সঠিক ঠিকানা প্রদান করে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে।

মনে রাখবেন যে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ অনুসারে শিশু জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে আপনার জন্ম নিবন্ধন করা সকল নাগরিকের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।  কোন কারণে ৪৫ দিনের মধ্যে যদি আপনার জন্ম নিবন্ধন করতে সক্ষম না হন শিশুর বয়স ৫ বছর হওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনার জন্ম নিবন্ধন করে নেয়া উচিত। ৫ বছর অতিক্রান্ত হলে নিবন্ধন করতে আপনাকে অতিরিক্ত কাগজপত্র ও সমস্যা হতে পারে।

আপনার জন্ম নিবন্ধন কেন প্রয়োজন ?

আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) প্রস্তুত হওয়ার পূর্বে আপনার জন্ম নিবন্ধন হচ্ছে আপনাকে নাগরিকত্বের একমাত্র প্রমাণপত্র। জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি হওয়ার আগে যে কোন জায়গায় আপনাকে পরিচয় প্রয়োজন হলে আপনার জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করা হয়।  এজন্য সময়মত আপনার আপনার জন্ম নিবন্ধন করে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 বাংলাদেশ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন অনুযায়ী শিশুর বয়স ৪৫ দিন আপনার জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। আর নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বেশি দেরি হলে পিতা-মাতাকে জরিমানাও দিতে হয়। 

আপনার জন্ম নিবন্ধন গুরুত্বপূর্ণ।  যেমন –

  • অনেকেই ১৮  বছর হলেই ড্রাইভিং লাইসেন্স করাতে চান। আর এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রস্তুত না থাকলে জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করতে হয়। 
  • 18 বছরের পূর্বে পাসপোর্ট এর প্রয়োজনে আপনার জন্ম নিবন্ধন লাগে। 
  • আপনার শিক্ষা জীবন শুরু করার ক্ষেত্রে যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হলেও জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হয়।
  • বিবাহ এর ক্ষেত্রে বয়স প্রমাণ এর জন্যেও আপনার জন্ম নিবন্ধন থাকতে হয়। 

আপনার নতুন জন্ম নিবন্ধনের  জন্য আবেদন করতে কি প্রয়োজন

আপনারা হয়তো জানেন যে এখন আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ অনলাইন ভিত্তিক হয়ে গিয়েছে।

আপনার জন্ম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে সাধারণভাবে প্রয়োজন হয় বাড়ির কর রশিদ / হাসপাতাল এর ছাড়পত্র / টিকা কার্ড ও পিতা-মাতার ফোন নাম্বার। 

তবে আবেদনকারির বয়স ভেদে ডকুমেন্টস ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হতে পারে। বয়স ভেদে আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য যে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের দরকার তার একটি তালিকা দেয়া হলো :-

আবেদনকারির বয়স যদি ০ থেকে ৪৫ দিন হলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জা লাগবে তা হল –

  • ইপিআই টিকা কার্ড / হাসপাতাল এর ছাড়পত্র
  • বাড়ির ট্যাক্স বা কর পরিষদ রশিদ
  • আবেদনকারির পিতা-মাতা বা অভিভাবক এর সচল ফোন নাম্বার
  • পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড ( বাধ্যতামূলক নয় ) ও
  • পিতা-মাতার অনলাইন আপনার জন্ম নি বন্দন সনদ (  বাধ্যতামূলক নয় )

আবেদনকারির বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর হলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস :- 

  • ইপিআই টিকা কার্ড / হাসপাতাল এর ছাড়পত্র
  • বাড়ির ট্যাক্স বা কর পরিষদ রশিদ
  • আবেদনকারির পিতা-মাতা বা অভিভাবক এর সচল ফোন নাম্বার
  • পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড 
  • পিতা-মাতার অনলাইন আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ (  বাধ্যতামূলক নয় )
  • প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর সহ প্রত্যয়ন পত্র 
  • আবেদনকারির ১ কপি রঙ্গিন পাসপোর্ট সাইজ চবি

আবেদনকারির বয়স ৫ বছর এর বেশি হলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস :- 

  • বয়স প্রমাণের জন্য চিকিৎসক কর্তৃক প্রত্যয়ন পত্র লাগবে ( বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল কর্তৃক স্বীকৃত এমবিবিএস বা তদূর্ধ্ব ডিগ্রিধারী হতে হবে। )
  • আবেদনকারির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনি /  জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট /  শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট লাগবে
  • জমি /  বাড়ি  ক্রয়ের দলিল বা কর প্রদানের রশিদ লাগবে
  • পিতা-মাতা বা অভিভাবকের স্থায়ী ঠিকানার কর পরিষদ রশিদ
  • পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) কার্ড ( বাধ্যতামূলক নয় )
  • পিতা-মাতার অনলাইন আপনার জন্ম নি বন্দন সনদ (  বাধ্যতামূলক নয় )

আপনার নতুন জন্ম নিবন্ধনের  জন্য আবেদন করার উপায়

নতুন আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন এর ফর্ম  পূরণ করতে ভিজিট করুন বাংলাদেশ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন এর অফিশিয়াল সাইট। এখান থেকে ব্যক্তির সাধারণ কিছু তথ্য যেমন নাম, ঠিকানা, লিঙ্গ এবং জন্মতারিখ প্রদান করে আবেদনের প্রথম ধাপ সম্পূর্ণ করতে হবে। পরবর্তীতে আরো কিছু তথ্য প্রদান করে আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন সম্পূর্ণ করতে হবে।  অনলাইনে নতুন আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম সহজে বোঝার লক্ষ্যে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি নিম্নে ধাপে ধাপে দেওয়া হল :-

ধাপ ১ :-  জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সাইটে প্রবেশ 

অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য প্রথমে ভিজিট করুন বাংলাদেশ জন্য ও মৃত্যু নিবন্ধন এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট। সাইটে প্রবেশ করে আপনার জন্ম নিবন্ধন এর ঠিকানা নির্বাচন করুন। আপনার আপনার জন্ম নিবন্ধনের  ঠিকানা হিসেবে আপনাকে জন্মস্থান, বর্তমান ঠিকানা অথবা স্থায়ী ঠিকানার যে কোন একটি নির্বাচন করতে হবে। 

এখানে যে ঠিকানা নির্বাচন করবেন আপনাকে পরবর্তীতে সে ঠিকানা থেকেই আপনার জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করতে হবে। তবে বাংলাদেশের থেকে দূতাবাসের সাহায্যে আবেদন করতে চাইলে আপনাকে ঠিকানার পরিবর্তে দূতাবাস নির্বাচন করতে হবে। 

ধাপ ২ :- নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির তথ্য প্রদান

এখন আপনাকে বেশ কিছু ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে বড় একটি ফর্ম  পূরণ করতে হবে।

আপনাকে পুরো নাম উভয় বাংলা ও ইংরেজিতে লিখতে হবে। নাম লেখার সম্পূর্ণ হলে ব্যক্তির জন্ম তারিখ প্রদান করতে হবে।  জন্ম তারিখ দেয়ার ক্ষেত্রে অফিসিয়াল ফরমেট :- DD-MM-YYYY  অনুসরণ করতে হবে। জন্ম তারিখ প্রদানের বক্সে ক্লিক করলে জন্ম তারিখ নির্বাচন করার অপশন চলে আসবে।  এক সাথে বয়সের উপর ভিত্তি করে আপনাকে নিবন্ধন করতে কি কি ডকুমেন্টস লাগবে তা সেখানে উল্লেখ করা থাকবে। 

ব্যক্তির নাম ও জন্ম তারিখ আপনাকে সফলভাবে দেওয়া সম্পূর্ণ হলে জন্মস্থানের ঠিকানা নির্বাচন করতে হবে। ঠিকানাটি পর্যায়ক্রমে লিখতে হবে। যেমন :- বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, গ্রাম।

ঠিকানার পাশাপাশি আপনাকে পিতা-মাতার কততম সন্তান ও তার লিঙ্গ নির্বাচন করতে হবে। সকল তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করে ফর্মটি আপনাকে পূরণ করা সম্পূর্ণ হলে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ৩ :- পিতা মাতার তথ্য প্রদান

আপনার জন্ম নিবন্ধনের এই ধাপে আপনাকে পিতা- মাতার বা আইনগত অভিভাবকের তথ্য প্রদান করতে হবে।  প্রথমে পিতার নাম বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বড় হাতের অক্ষরে লিখতে হবে। এক্ষেত্রে পিতার যদি অনলাইন জন্ম নিবন্ধন  এবং জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID ) নাম্বার থেকে থাকলে সেই নম্বরটিও আপনাকে দিতে হবে। মাতার তথ্য একইভাবে প্রদান করে ফর্মটি আপনাকে  পূরণ করতে হবে।  

অনলাইনের আপনার জন্ম নিবন্ধনের  সময় পিতা- মাতার অনলাইন আপনার জন্ম নিবন্ধন  নাম্বার দিলে পিতা-মাতার নাম সক্রিয়ভাবে তাদের আপনার জন্ম নিবন্ধন থেকে পূরণ হয়ে যাবে। অনলাইনে আপনাকে আপনার জন্ম নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে আগে পিতা-মাতার অনলাইন আপনার জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হতো।  তবে বর্তমানে পিতা-মাতার অনলাইন আপনাকে আপনার জন্ম নিবন্ধন থাকা বাধ্যতামূলক নয়।

পিতা-মাতার  তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করা সম্পূর্ণ হবে আবারো পরবর্তী বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।

ধাপ ৪ :- স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা প্রদান

আবেদনের এই ধাপে আপনাকে বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা প্রদানের প্রয়োজন হবে।  আমরা আবেদনের শুরুতেই জন্মস্থানের ঠিকানা প্রদান করেছি। এখন শুধু বর্তমান স্থায়ী ঠিকানা লেখার জন্য “ কোনোটিই নয়”  অপশন নির্বাচন করুন। 

এখন স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা প্রদান করার জন্য নতুন একটি ফর্ম  চলে আসবে।  স্থায়ী ঠিকানার ক্ষেত্রে জন্মস্থান এবং স্থায়ী ঠিকানা এক হলে “জন্মস্থান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা একই” চেক বক্সে টিক দেন। 

আবার বর্তমান ঠিকানার ক্ষেত্রে বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা একই হলে “ স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা একই”  চেক বক্সে টিক দিন। 

যদি ঠিকানা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে তবে পর্যায়ক্রমে ঠিকানা নির্বাচন করে দিন। ঠিকানা প্রদানের ক্ষেত্রে পরযায়ক্রমে দেশ, বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন / পৌরসভা  দিয়ে ঠিকানা লিখুন।

 সফলভাবে ঠিকানা প্রদান করার সম্পন্ন হলে আবারও পরবর্তী  বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।

ধাপ ৫ :- আবেদনকারীর তথ্য প্রদান

ধাপে ব্যক্তির আপনার আপনার জন্ম নিবন্ধনের  আবেদনকারের তথ্য দিতে হবে।  সাধারণভাবে ব্যক্তির আপনার আপনার জন্ম নিবন্ধনের  জন্য তার পিতা- মাতা, পিতামহ- পিতামহী, মাতামহ- মতামহী বা আইনগত অভিভাবক দায়ী হয়ে থাকেন। এজন্য আপনাকে আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন সাধারণত তারাই করে থাকেন। 

আবার যদি আপনি নিজেই নিজের আপনার জন্ম নিবন্ধন এর জন্য আবেদন করে থাকেন তবে “ নিজ”  অপশন নির্বাচন করতে হবে।  বা পিতা- মাতা, পিতামহ- পিতামহী, মাতামহ- মতামহী বা আইনগত অভিভাবক ইত্যাদি আপনাকে নির্বাচন করতে হবে।

আপনার একটি সচল মোবাইল নম্বর এরও প্রয়োজন হবে।  এই নম্বরে আপনাকে আবেদন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য মেসেজ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। আপনি যদি চান তাহলে একটি ইমেইল আইডিও ব্যবহার করতে পারেন।  তবে আপনাকে ইমেইল ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক নয়।

সবকিছু ঠিকভাবে দেওয়া সম্পূর্ণ হলে আপনি পরবর্তী বাটনে ক্লিক করে আবেদন সম্পন্ন করুন।

ধাপ ৬ :- প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সাবমিট

সর্বশেষে অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন এর জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র সাবমিট করতে হবে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে কার্ডের স্ক্যান্ড কপি  বা জমি / বাড়ির কর রশিদ সাবমিট করতে পারবেন।  চাইলে একাধিক ফাইলও  সাবমিট করা যায়।  এজন্য একটি ফাইল সাবমিট করা শেষ হলে সংযোজন বাটনে ক্লিক করে আরেকটি ফাইল সাবমিট করুন। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন প্রত্যেকটি ফাইল 100 KB  এর ছোট হতে হবে।

ধাপ ৭ :- আবেদন পত্র প্রিন্ট

এই ধাপগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করে অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন ফর্ম  সাবমিট করে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন পত্র প্রিন্ট করার অপশন পাবেন।  তবে আবেদন পত্র প্রিন্ট করা অবশ্যক নয়।  প্রিন্ট না করলেও আবেদনপত্রের নাম্বার আপনাকে অবশ্যই সংগ্রহ করে রাখতে হবে।  আবেদন করার  ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে আপনাকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ /  পৌরসভা থেকে আপনার জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করবেন। কার্যালয়ে যে আপনার আবেদন পত্রের নাম্বার অথবা প্রিন্ট কপি জমা দিলে আপনাকে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুমোদন করে প্রিন্ট করিয়ে দিবে। 

আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন যাচাই করবেন জেভাবে

আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন পত্র সফলভাবে সাবমিট হলে আপনাকে পরবর্তীতে আবেদনটি অনুমোদন হয়েছে কিনা তা অনলাইন থেকে আপনি জেনে নিতে পারেন। । আপনার আবেদন অনুমোদন হওয়ার পর অনলাইনে আপনাকে জন্ম নিবন্ধন অবস্থা চেক করে জেনে নিতে পারেন আর আপনার আপনার জন্ম নিবন্ধনটি অনলাইন হয়েছে কিনা।

আপনার জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করবেন জেভাবে

নতুন আপনার আপনার জন্ম নিবন্ধনের  জন্য আবেদন করার পর অনুমোদন হলে তা সংগ্রহ করার জন্য আপনি যে নিবন্ধক কার্যালয় বাছাই করেছিলেন সেখানে ইউনিয়ন /  পৌরসভা থেকে আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদদের সংগ্রহ করতে হবে। মনে রাখবেন যে ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কার্যালয় থেকে সংগ্রহ না করলে আপনাকে আবেদনটি সক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।  আপনার জন্ম নিবন্ধন তে ডাউনলোড করে দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবের স্বাক্ষরশীল নিতে হয়।  তাই একই সাথে চেয়ারম্যান / পৌরসভা মেয়র থেকেও ছিল স্বাক্ষর নিতে হয়।

আপনার জন্ম নিবন্ধন ফি

যদি নিবন্ধন ব্যক্তির বয়স ০  থেকে ৪৫  দিন হয় তবে আপনি ফ্রিতে আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন করা যায়।  নিবন্ধন কারি ব্যক্তির বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর হলে দেশে নিবন্ধন ফি হল ২৫ টাকা এবং আর বিদেশে ১ ডলার।  নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির বয়স যদি পাঁচ বছরের বেশি হলে নিবন্ধন ফ্রি হল দেশে ৫০ টাকা এবং আর বিদেশে ১ ডলার।  জন্মতারিখ সংশোধনের জন্য দেশে ফি হল ১০০ টাকা এবং বিদেশে ২ ডলার। অন্যান্য তথ্য সংশোধন ও সনদের কপি এর জন্য আবেদন ফি দেশে হল ৫০ টাকা এবং বিদেশে ১ ডলার।  এখানে নিম্নে একটি তালিকা দেওয়া হল :- 

বয়সনিবন্দন ফি
নিবন্ধন কারি ব্যক্তির বয়স ০ থেকে ৪৫ দিন হলেবিনামূল্যে
নিবন্ধন কারি ব্যক্তির বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর হলে২৫ টাকা
নিবন্ধন কারি ব্যক্তির বয়স ৫ বছর এর বেশি হলে৫০ টাকা

আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন যেভাবে বাতিল করবেন

আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন বিভিন্ন প্রয়োজনে বাতিল করা লাগতে পারে। আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন বাতিল করার দরকার হলে আপনাকে প্রথমে যে ইউনিয়ন পরিষদ / পৌরসভা / কাউন্সিলরের অফিস থেকে আবেদন করেছেন সেখানে যেতে হবে।

আবেদন বাতিলের জন্য আপনার আবেদনের অ্যাপ্লিকেশন আইডি জানা থাকতে হবে।  আবেদন থেকে বাতিল করার উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে তা আপনাকে আবেদন বাতিলের অনুরোধ করতে হবে। 

তাছাড়া নতুন আপনার জন্ম নিবন্ধন করার পর পরবর্তী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে আপনার জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করা না হলে তার সক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। আপনার আবেদনে কোন ভুল থাকলে আবেদনটি বাতিল করে আবারো আপনি নতুনভাবে পরম পূরণ করতে পারবেন।  নিবন্ধন কার্যালয়ের অফিসে গিয়ে বাতিল না করতে চাইলে আপনাকে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে। 

অনেক ক্ষেত্রে আপনার জন্ম নিবন্ধনে ভুল তথ্য দেয়া হয়ে যায়। এই ভুল তথ্য দ্রুত সংশোধন না করলে আপনাকে পরবর্তীতে সমস্যাই পড়তে হতে পারে । তাই উচিত্‍ আপনার জন্ম নিবন্ধনে ভুল থাকলে টা যত দ্রুত সম্বব আপনাকে সংশোধন করে নেওয়া।

Related Articles

Back to top button
error: