
Last updated on March 12th, 2025 at 05:08 am
কক্সবাজার এর দর্শনীয় স্থানসমূহ এবং ভ্রমণ গাইড। Best activities in coxs bazar. কক্সবাজারে দেখার জন্য সেরা ১০টি স্থান, কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান কি কি, কক্সবাজার ট্যুর প্ল্যান, এই কক্সবাজার যাওয়ার উপযুক্ত সময়.
সমদ্রের বিশালতার টানে অনেকেই ছুটির দিনগুলোতে পরিবার অথবা বন্ধুর সাথে ছুটে যায় সেখানে। সমুদ্রের পানিতে পা ভিজিয়ে ঠাণ্ডা হিমেল হাওয়ায় মনের সকল দেনা পাওনা এই বিশাল সমুদ্রের কাছে গচ্ছিত রেখে আসা যায় সহজেই।
বিশ্বের দীর্ঘতম এই সমুদ্র সৈকত ভ্রমনে অনেকের শুধু সমুদ্র যাত্রার কথাই মাথায় আসে। অথচ এই সমুদ্র সৈকতের জেলায় আপনি উপভোগ করতে পারেন পাহাড় চারণ, বন বিচরণ, ট্রি এডভেঞ্চার, স্কাই ডাইভিং, প্যারাসেইলিং ছাড়াও অনেক মজার মজার অ্যাডভেঞ্চার। এটা বলা বাহুল্য যে এখানে আরও কিছু ভিন্ন স্বাদের মজাদার সামুদ্রিক খাবার উপভোগ করা যাবে যেমন অক্টপাস স্কুইড, কোরাল, রূপচাঁদা, টুনা, জেলিফিশ, ঝিনুক, কাঁকড়া, স্যালমন ইত্যাদি।
কক্সবাজার ট্রি এডভেঞ্চার
ট্রি এডভেঞ্চার উপভোগ করতে চাইলে আপনাকে চলে যেতে হবে কাছেই মেধাকচ্ছপিয়া ফরেস্ট পার্কে। এখানে ট্রি এডভেঞ্চারের ক্ষেত্রে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যাবস্থা আছে ফলে আপনি নিরাপত্তার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। ট্রি অ্যাডভেঞ্চারের প্রতি ট্রিপে খরচ পরবে ৫০ টাকার মত। কক্সবাজার আসার পথে এই বন ভ্রমন যোগ করতে পারে আপনার ভ্রমনে বাড়তি মাত্রা। ট্রি অ্যাডভেঞ্চার শেষে ঘুরে আসুন বনের ভিতরে। চারিদিকে সবুজে ঘেরা আর পাখির ডাকে মুখরিত এক পরিবেশে আপনি নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন। বন বিচরণের জন্য আরও ঘুরে আসতে পারেন ফাসিয়া খালি আর ফয়েস লেকে।
হিমছড়ি
কক্সবাজার শহর ছেড়ে হিমছড়ির দিকে গেলে উপভোগ করা যায় একদিকে পাহাড় আর অন্যদিকে সমুদ্রের বিশালতা।
হিমছড়ির দিকে গেলে আপনি সেখানে পাহাড়ে উঠার আনন্দ নিতে পারবেন। পাহাড় চুড়ায় উঠে চারিদিকে সবুজ আর নীলের ছড়াছড়ি আপনার মনের ভিতরে এক অনাবিল আনন্দের জন্ম দিবে। হিমছড়ির সুর্য অস্ত দেখতে কেন যেন একটু বেশিই ভালো লাগে। কারন এখানে সুগন্ধা, লাবনী অথবা কলাতলী বীচের তুলনায় মানুষের সংখ্যা কম তাই নিজের মত করে উপভোগ করা যায়। আর এখানেই আপনি উপভোগ করতে পারবেন প্যারাসেইলিং। প্রতি রাউন্ড প্যারাসেলিং এ আপনাকে খরচ করতে হবে ২০০০ টাকা।
বিচিত্র খাবার
আপনি খাবারের বিচিত্রতা খুঁজে পাবেন কক্সবাজারে। এখানেকার কিছু ঐতিহ্যবাহী রেস্টুরেন্টের মধ্যে রয়েছে পউশি, ঝাউবন, রূপসী বাংলা, বৈশাখী, ও মারমেইড। রেডিয়েন্ট লাইভ ফিশে গেলে আপনি তাজা মাছের বারবিকিউর স্বাদ ছাড়াও উপভোগ করতে পারবেন ফিশ মিউজিয়ামের বিচিত্র ধরেনর সামদ্রিক মাছ। যদিও ফিশ মিউজিয়ামে আপনাকে ২০০ টাকা টিকিট কেটে ঢুকতে হবে আর এখানে রেস্টুরেন্টে খাবার খরচও বেশি পরে যায়।
লংবিচ হোটেলের পাশে সল্ট রেস্টুরেন্টেও আপনি সামুদ্রিক মাছের বিচিত্র স্বাদ নিতে পারবেন। কিন্তু রেডিয়েন্ট লাইভ ফিশ, মারমেইড এবং সল্ট রেস্টুরেন্ট কিছুটা ব্যায়বহুল। তাই কম খরচে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যালমন, কোরাল, টুনা, অক্টপাস, জেলিফিশ, কাঁকড়া উপভোগ করতে চলে যান সুগন্ধার দিকে। সুগন্ধা বীচের দিকে যেতে পথে রাস্তার ডান হাতেই দেখবেন যে এই তাজা মাছ গুলো ছোট ছোট হটেল গুলোতে বিক্রি হচ্ছে। আপনি পছন্দ মত কিনে অর্ডার করলে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে ওরা আপনাকে মাছের গরম গরম ফ্রাই পরিবেশন করবে।
শুঁটকী মাছ
অনেকেই শুঁটকী মাছ কিনতে পছন্দ করেন এখানে আসলে। ভালো শুঁটকী পেতে চাইলে চলে যান বড় বাজার শুঁটকির আরতে।
এই আড়তে যেতে চাইলে আপনাকে আটো রিকশাতে উঠে বড় বাজারের দিক যেতে হবে। তারপর বড়বাজারের দিকে যেতে পান বাজারের পরের গলিতেই দেখতে পাবেন শুঁটকির বড় বাজার। এই বাজার চিনবার আরও একটি উপায় হচ্ছে আপনি বড় বাজারে সিটি ব্যাংকের গলির মাথায় নামবেন তারপর গলি ধরে সোজা হেটে যাবেন। এখানে গেলে শুধু আপনি শুঁটকির আড়তই পাবেননা বরং খুঁজে পাবেন সামুদ্রিক মাছের পাইকারি বাজার। আপনি চাইলে ককশিটে করে মাছ সংরক্ষন করে নিয়ে যেতে পারেন এখান থেকে।
কক্সবাজারে টুরিস্টদের কাছ থেকে বেশি টাকা হাঁকিয়ে নেয়াটাই ব্যাবসায়িদের প্রধান উদ্দেশ্য। তাই আপনাকে অবশ্যই দরদামে কৌশলী হতে হবে। দুই তিন দোকান যাচাই করে তারপরে কেনাকাটা করবেন। এখানে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হল অটোরিকশা। অটোরিকশায় কখনই রিজার্ভে জাবেন না। রিজার্ভে উঠলেই আপনার কাছে ৫ টাকার ভাড়া নিবে ৬০ টাকা। এখানে অটোরিকশার ভাড়ার একটা আইডিয়া দিয়ে দেই, যেমন আপনি কলাতলি থেকে বড়বাজার যেতে চাইলে আপনার ভাড়া পরবে ১০ টাকা আর মধ্যভাগে কোন স্থানে নামলে ভাড়া পরবে ৫ টাকা।
কক্সবাজার পর্যন্ত আসলে আপনি মহেশখালী, ইনানী বীচ আর সেন্ট মার্টিন্স দীপ কেন মিস করবেন?
মহেশখালী
মহেশখালী যেতে চাইলে আপনাকে ঘাট নং ৬ এ যেয়ে স্পীড বোট অথবা নৌকায় উঠতে হবে। সেখান থেকে চলে যাবেন মহেশখালী, বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দীপে। মহেশখালীর বিখ্যাত মিষ্টি পান কোনভাবেই মিস করবেন না। এখানে গেলে ঘুরে আসুন ঐতিহ্যবাহী শ্রী আদিনাথ মন্দির সহ আরও কিছু ঐতিহ্যবাহী মন্দিরে।
ইনানী বীচ
এছাড়াও টেকনাফের পথে ঘুরে আসতে পারেন ইনানী বীচে। এই বীচের বিশেষত্ব হল এখানকার শিলা পাথর গুলি। কালো রঙের এই শিলা পাথরগুলো খুবই বিচিত্র আর এখানকার পানির রঙও বেশ স্বচ্ছ অন্যান্য বীচের তুলনায়। ইনানী বীচে আপনি বাইক ও ঘোড়ায় চড়তে পারেন। প্রতিটি রাইডে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মত পরতে পারে।
সেন্টমার্টিন
সেন্ট মার্টিন্স বা প্রবাল দীপ তো এক অপার সৌন্দর্যের ধারক। এখানে প্রছুর নারিকেল হয় বলে এই দীপকে নারকেল জিঞ্জিরাও বলা হয়। এই দীপে যেতে চাইলে আপনাকে টেকনাফ যেয়ে জাহাজ, সী ট্রাক বা ট্রলারে চড়ে যেতে হবে, কেয়ারী সিন্দাবাদ জাহাজটি সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। সমুদ্র পথে ভ্রমনে আনন্দের এক নতুন মাত্রা যোগ করবে সীগাল। সেন্ট মার্টিন্স গেলে আপনি উপভোগ করবেন নীল পানি, সামুদ্রিক শৈবাল, কেওড়ার ঝোপঝাড়, শিলা পাথর, সামুদ্রিক কোরাল, রাতের আকাশে তারার মেলা, হূমায়ন আহমেদ এর “সমুদ্র বিলাস” আর বিচিত্র ধরনের সামুদ্রিক মাছ।

কক্সবাজারে দেখার জন্য সেরা ১০টি স্থান
কক্সবাজার বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন গন্তব্য। এখানে রয়েছে অনেক সুন্দর এবং মনোমুগ্ধকর স্থান যা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। নিচে কক্সবাজারের প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলো উল্লেখ করা হলো:
- কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত: বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত। এর বালুকাময় তীর এবং সূর্যাস্ত দর্শন সবার মন কাড়ে।
- ইনানী বিচ: কক্সবাজার থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি শিলা সমৃদ্ধ সৈকত, যা প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের জন্য খুবই জনপ্রিয়।
- হিমছড়ি জলপ্রপাত: কক্সবাজার থেকে কিছু দূরে অবস্থিত একটি চমৎকার পাহাড়ি জলপ্রপাত, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ।
- মহেশখালী দ্বীপ: বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ যেখানে আপনি সমুদ্রের সৌন্দর্য এবং পাহাড়ের মিশ্রণ পাবেন। এখানে অবস্থিত আদিনাথ মন্দিরও একটি জনপ্রিয় আকর্ষণ।
- সোনাদিয়া দ্বীপ: একটি ছোট্ট দ্বীপ যা কক্সবাজার থেকে নৌকায় যাওয়া যায়। এটি ম্যানগ্রোভ বন, পাখি দেখার জন্য বিখ্যাত।
- সুগন্ধা বিচ: কক্সবাজারের আরেকটি জনপ্রিয় সৈকত যেখানে অনেক রেস্তোরাঁ এবং সি ফুডের দোকান রয়েছে।
- পতেঙ্গা সৈকত: কক্সবাজার থেকে একটু দূরে পতেঙ্গা সৈকত একটি অনন্য দর্শনীয় স্থান।
- সাফারি পার্ক: কক্সবাজারের কাছাকাছি একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণাগার যেখানে বন্যপ্রাণী দেখতে পারবেন।
- রামু বৌদ্ধ মন্দির: কক্সবাজারের রামু উপজেলায় অবস্থিত বৌদ্ধ মন্দির, যেখানে বিভিন্ন ধরনের বৌদ্ধ প্রতিমা এবং স্থাপত্য দেখা যায়
কক্সবাজার ট্যুর প্যাকেজ
অনেক ভ্রমণ সংস্থা কক্সবাজার ট্যুর প্যাকেজ প্রদান করে। বিভিন্ন প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত থাকে হোটেল, গাড়ি ভাড়া, খাবার, এবং দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ। একটি সাধারণ ৩ রাত ৪ দিনের প্যাকেজের দাম শুরু হয় প্রায় ৭,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা, যা আপনি ভ্রমণ সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে খুঁজে দেখতে পারবেন।
কক্সবাজার ট্যুর প্ল্যান
কক্সবাজারে ৩-৪ দিনের একটি সাধারণ ট্যুর প্ল্যান হতে পারে:
- প্রথম দিন: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, সুগন্ধা বিচ পরিদর্শন।
- দ্বিতীয় দিন: হিমছড়ি, ইনানী বিচ।
- তৃতীয় দিন: মহেশখালী দ্বীপ ভ্রমণ এবং স্থানীয় দোকানপাট ঘুরে দেখা।
- চতুর্থ দিন: রামু বৌদ্ধ মন্দির এবং সাফারি পার্ক।
কক্সবাজার বিচের নাম
- কক্সবাজার মেইন বিচ
- সুগন্ধা বিচ
- ইনানী বিচ
- হিমছড়ি বিচ
- কলাতলি বিচ
কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত
এই কক্সবাজার সবচেয়ে বিখ্যাত এর প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকতের জন্য, যা বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত হিসেবে পরিচিত।
কক্সবাজার যাওয়ার উপযুক্ত সময়
কক্সবাজার ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো শীতকাল (নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি), কারণ তখন আবহাওয়া আরামদায়ক থাকে এবং সমুদ্র শান্ত থাকে। বর্ষাকালে (জুন-আগস্ট) ভ্রমণ এড়ানো ভালো, কারণ সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস ও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
কখন কক্সবাজার অফ সিজন
বর্ষাকাল (জুন থেকে আগস্ট) কক্সবাজারের অফ সিজন হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ তখন আবহাওয়া খারাপ হতে পারে এবং সমুদ্র উত্তাল থাকে। শীতকাল (নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি) ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।
কক্সবাজার থেকে ইনানী ভাড়া
কক্সবাজার থেকে ইনানী যেতে আপনি অটোরিকশা বা প্রাইভেট কার ভাড়া নিতে পারেন। অটোরিকশার ভাড়া প্রায় ৫০০-৮০০ টাকা, আর প্রাইভেট কারের ভাড়া ১৫০০-২০০০ টাকা হতে পারে।
রাজশাহী থেকে কক্সবাজার বিমান ভাড়া, টিকিট, সময়সূচী ও গুরুত্বপুর্ন তথ্য
কম খরচে কক্সবাজার ভ্রমণ
কম খরচে কক্সবাজার ভ্রমণের জন্য আপনি বাসে যেতে পারেন এবং সস্তা হোটেল বা গেস্ট হাউসে থাকতে পারেন। স্থানীয় খাবার খাওয়া এবং কম খরচের পরিবহন ব্যবহার করেও আপনি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
কক্সবাজার সৈকত
কক্সবাজারে কয়েকটি প্রধান সৈকত রয়েছে:
- কক্সবাজার মেইন বিচ
- ইনানী বিচ
- সুগন্ধা বিচ
- হিমছড়ি বিচ
কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান, কক্সবাজার ট্যুর প্যাকেজ, কক্সবাজার ভ্রমণ, কক্সবাজার ভ্রমণ কাহিনী, কক্সবাজার ভ্রমণ প্যাকেজ, কক্সবাজার অফ সিজন কখন, কক্সবাজার থেকে ইনানী ভাড়া, কম খরচে কক্সবাজার ভ্রমণ, কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান, কক্সবাজার সৈকত, কক্সবাজার জেলার মানচিত্র, কক্সবাজার ছবি, কক্সবাজার ভ্রমণ, কক্সবাজার হোটেল, কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত, কক্সবাজার জেলা