ভুলে যাওয়া রোগ ডিমেনশিয়া, লক্ষণ, প্রতিরোধ, চিকিৎসা, ভুলে যাওয়া সমস্যা দূর করার উপায়, ডিমেনশিয়া রোগের ঔষধ, ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ, ডিমেনশিয়া কেন হয়, অল্প বয়সে ভুলে যাওয়া, ভুলে যাওয়া রোগ in english, ভুলে যাওয়া রোগ খাদ্য, ভুলে যাওয়া কিসের লক্ষণ।
ভুলে যাওয়া কিসের লক্ষণ, ভুলে যাওয়া রোগ খাদ্য, আমি সব কিছু ভুলে যাই, ভুলে যাওয়া রোগের নাম, ভুলে যাওয়া রোগ in english, ডিমেনশিয়া থেকে বাচার উপায়, ডিমেনশিয়া রোগের ঔষধ, ভুলে যাওয়া রোগ কেন হয়।
ডিমেনশিয়া কী, ভুলে যাওয়া কিসের লক্ষণ, প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও সচেতনতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
ডিমেনশিয়া কী / ভুলে যাওয়া রোগ কি?
এই ডিমেনশিয়া বা ভুলে যাওয়া রোগ হল মস্তিষ্কের একটি ক্ষয়জনিত রোগ। এ রোগে মানুষের বুদ্ধি, স্মৃতিশক্তি এবং ব্যক্তিত্বের ধরন পরিবর্তন হয়ে যায়।এই রোগ সাধারণত ৬৫ বছর বয়সের পর শুরু হয়।
অনেক ধরনের ডিমেনশিয়া রয়েছে, যার মধ্যে আলঝেইমার্স ডিজিজ সবচেয়ে বেশি হয়। এর ফলে মানুষের ভেতরে চিন্তার ক্ষমতা, আচরণ, ব্যক্তিত্ব এবং ভুলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। ৬৫ বছর বয়সের আগের সাধারণত ডিমেনশিয়া হয় না।
ডিমেনশিয়া কেন হয়?
ডিমেনশিয়ার কারণ এখনও জানা যায়নি তবে যাদের পরিবারে ভুলে যাওয়া সমস্যা আছে তাদের হতে পারে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে, ধূমপান করেন, অতিরিক্ত মদ্যপান করেন, এ ছাড়া থাইরয়েডের সমস্যা যদি কারো থাকে তাদের ভুলে যাওয়া সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যক্রম থেকে যারা দূরে আছেন তাদেরও ভুলে যাওয়া সমস্যা হতে পারে। তবে এগুলো সরাসরি ডিমেনশিয়ার কারণ না, এগুলোকে ঝুঁকি বলা হয়।
ডিমেনশিয়ার লক্ষণ কি? ভুলে যাওয়া কিসের লক্ষণ ?
- ভুলে যাওয়ার প্রবণতা হবে, কাছের স্মৃতি কমে যাবে। যেমন আপনি আজকে সকালে কী খেয়েছেন মনে করতে পারবেন না, বা গতকাল রাতে কী করেছেন মনে করতে পারবেন না, আবার একই কথা বারবার বলতে থাকবেন, একই কাজ বারবার করতে থাকবেন। কারণ আপনি ভুলে যাচ্ছেন।দূরবর্তী স্মৃতিগুলো, যা মস্তিষ্কে ইতোমধ্যে সঞ্চিত আছে তা থাকবে। ১০ বছর আগে কী হয়েছিল, ২০ বছর আগে কী হয়েছিল তা মনে থাকবে। কিন্তু একদম কাছের স্মৃতি ধ্বংস হবে। সাম্প্রতিক কিছু মনে রাখতে পারবেন না।
- ডিমেনশিয়ার কারণে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ, চিন্তা করা, যুক্তি দিয়ে কিছু করার, সাধারণ যোগ বিয়োগ করা, কোনো কিছুকে দেখে সেটাকে আবার তৈরি করা, অন্যকে অনুকরণ করা ইত্যাদির প্রবণতা কমতে থাকবে।
- ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন ঘটবে। ডিমেনশিয়া হওয়ার পর আগে যে ব্যক্তিত্ব ছিল সেটির পরিবর্তন ঘটবে, ও আচরণজনিত সমস্যা হবে।
ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ ও ডিমেনশিয়া থেকে বাচার উপায়
ডিমেনশিয়া প্রতিরোধের উপায় হচ্ছে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্নভাবে মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখা। সক্রিয় মস্তিষ্কের মানুষের ডিমেনশিয়া কম হয়।
ডিমেনশিয়ার চিকিৎসা কি? ডিমেনশিয়া রোগের ঔষধ
ডিমেনশিয়া হয়ে গেলে তা ভালো করা যায় না। তবে ডিমেনশিয়ার যে ন্যাচারাল কোর্স, তার গতিটাকে কমিয়ে রাখা যায় বলে। এর জন্য কিছু ওষুধ আছে, লাইফস্টাইল মোডিফিকেশন আছে, মনস্তাত্ত্বিক থেরাপি আছে। এগুলোর মাধ্যমে ডিমেনশিয়ার গতি কমানো যায়, কিন্তু রোগটি সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব হয় না।
এই ডিমেনশিয়া রোগীদের জন্য স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ বা নিউরোলজিস্ট এবং মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ উভয়েরই সম্মিলিত চিকিৎসার প্রয়োজন।
কারণ স্মৃতিশক্তির কারণে যে সমস্যা হয় তা নিউরোলজিস্টরা দেখবেন এবং বুদ্ধিবৃত্তিক ও ব্যক্তিত্বের কারণে যে সমস্যা হয় তা মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা দেখবেন। অনেক সময় ফিজিওথেরাপিস্ট প্রয়োজন হয় কারণ কেয়ার গিভারদের প্রশিক্ষণ লাগে, পরিবারের সদস্যদেরও প্রশিক্ষণ লাগে। ডিমেনশিয়ার চিকিৎসা তাই এককভাবে নয়, বরং একটি টিমের মাধ্যমে সমন্বিতভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়।
ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা
৬৫ বছরের পর যত বয়স বাড়তে থাকে, তত ডিমেনশিয়া বা ভুলে যাওয়া সমস্যা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
এক্ষেত্রে মানুষের সচেতনতা খুব জরুরি। একটা সাধারণ ধারণা আছে যে বয়স্ক মানুষ ভুলেই যাবে বা একটু অন্যরকম আচরণ করবে। কিন্তু এই চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
বয়স্ক মানুষের ভুলে যাওয়া, অস্বাভাবিক আচরণ হল ডিমেনশিয়ার লক্ষণ বা ভুলে যাওয়া রোগ। যদি দ্রুত শনাক্ত করে চিকিৎসার আওতায় আনা যায় তাহলে ওই ব্যক্তি প্রায় স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।