ব্রকলি খাওয়ার অপকারিতা, ব্রকলি দাম, ব্রকলির ছবি, ব্রোকলি চাষ পদ্ধতি, ব্রকলি চাষ পদ্ধতি, ব্রকলি খাওয়ার নিয়ম, ক্যাপসিকাম খাওয়ার উপকারিতা, ব্রকলি রেসিপি, লেটুস পাতার উপকারিতা, ব্রকলি খাওয়ার উপকারিতা, ব্রকলি খাওয়ার অপকারিতা, ব্রকলি দাম, ব্রকলির ছবি, ক্যাপসিকাম খাওয়ার উপকারিতা, ব্রকলি চাষ পদ্ধতি, কাঁচা রসুন খাওয়ার নিয়ম, ডিম খাওয়ার সঠিক নিয়ম
ব্রোকলি চাষ বাংলাদেশের জন্য একটি লাভজনক উদ্যোগ হতে পারে, এবং এটি রপ্তানিযোগ্য সবজি হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে। যথাযথ পরিচর্যা ও প্রযুক্তি ব্যবহারে ব্রোকলি চাষে সফলতা অর্জন সম্ভব।
ব্রোকলি চাষ করে লাভবান হউন। ব্রোকলি অনেকটা ফুলকপির মত হলেও ফুলগুলো সাদার পরিবর্তে সবুজ। স্বাদে ও গুণেও অসাধারণ।
প্রতি পিস ব্রোকলি ওজনে ৭শ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত হয় যা বাজারে ১৫ থেকে ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
সাধারণ ফুলকপির চেয়ে আবাদে খরচ কম আবার দাম বেশি হওয়ায় এ নতুন সবজি চাষে ঝুঁকছেন অনেক কৃষক।
ইউরোপিয়ান ফসল বারবারা জাতের ব্রোকলি চাষ করে অল্প সময়ে অধিক লাভবান হওয়া যায়। এতে অধিক পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে যা ফুলকপির চেয়ে বেশি। এই সবজিতে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন কে পাওয়া যায়। ফুলকপিতে ভিটামিন এ নাই। ভিটামিন এ থাকায় এ সবজি খেলে দৃষ্টি শক্তি বাড়ে।
প্রতি শতকে ২৫-৩০ দিন বয়সের ২০০টি চারা রোপন করে মাত্র ৫০-৬০ দিন পরই ৪০ মণ ব্রকলি উৎপাদন করা যায়। এই সবজি দোআঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটিতে ভাল হয়। মাটি ভালভাবে ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হয়। মধ্য ভাদ্র থেকে মধ্য পৌষ এর মধ্যে বীজ বপন ও চারা রোপন করতে হয়। চারা ৫০ সেন্টিমিটার দূরত্বে রোপন করতে হয়।
সাধারণত একর প্রতি গোবর ৬ টন, ইউরিয়া ১০০ কেজি, টি এস পি ৭০ কেজি ও পটাশ ৫৫ কেজি প্রয়োগ করতে হয়।
ব্রকলির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
বর্তমানে শীতকালীন সবজির মধ্যে ব্রকলি বেশ পরিচিত। ফুলকপির মতো দেখতে এই সবুজ সবজিটি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ও সুস্বাদু। কিছু বছর আগে বাংলাদেশে এর প্রচলন ছিল না, কিন্তু এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি উৎপাদিত হচ্ছে।
পুষ্টিগুণ
ব্রকলি একটি পুষ্টিকর সবজি। কাঁচা ব্রকলি খেলে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। বেশি রান্না করলে এর পুষ্টি উপাদান কমে যায়, তাই ভাপে সেদ্ধ বা সালাদ ও স্যুপ বানিয়ে খাওয়া ভালো।”
১০০ গ্রাম ব্রকলিতে রয়েছে:
- ক্যালোরি: ৩২ কিলোক্যালরি
- কার্বোহাইড্রেট: ৬ গ্রাম
- প্রোটিন: ২.৫ গ্রাম
- ফাইবার: ২.৫ গ্রাম
- ফ্যাট: ০.১ গ্রাম
- ৯৭% পানি
ব্রকলির উপকারিতা
- ভিটামিন সি: শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, ফ্রি র্যাডিক্যালস দূর করে।
- ফাইবার: খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলকে প্রতিহত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: ফাইবার ও পানির কারণে এটি খেলে অন্য খাবারের আসক্তি কমে।
- সালফোরাফেন: ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল বাড়ায়, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- রোগ প্রতিরোধ: ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ প্রতিহত করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- চোখের স্বাস্থ্য: বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়, যা চোখের জন্য উপকারী।
- প্রদাহ কমানো: ক্যায়েম্পফেরোল শরীরের প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
- ডিটক্সিফিকেশন: প্রাকৃতিক ডিটক্স হিসেবে পেট পরিষ্কার করে।
- হাড়ের স্বাস্থ্য: ভিটামিন কে হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় এবং অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধ: বায়োঅ্যাক্টিভ যৌগ ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়, বিশেষ করে স্তন ও কোলোরেক্টাল ক্যানসারে।
সাবধানতা
থাইরয়েডের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ব্রকলি খাওয়া নিষেধ, কারণ এটি থাইরয়েড গ্রন্থির ওপর প্রভাব ফেলে। কিছু মানুষের ব্রকলির কিছু সুগার সহজে হজম হয় না; গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হলে ব্রকলি রান্না করে খাওয়া যেতে পারে।
ব্রকলি পুষ্টির অভাব পূরণে একটি শক্তিশালী সবজি, যা স্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত।
ব্রোকলি চাষ পদ্ধতি (বানিজ্যিক)
ব্রকলি ক্রসিফেরী গোত্রের অন্তর্ভুক্ত শীতকালীন সবজি। এতে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফোলেট ও আঁশ রয়েছে। এতে থাকা phytonutrients হৃদরোগ, বহুমূত্র এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। ব্রকলি জারণরোধী (antioxidant) ভিটামিন এ এবং সি সরবরাহ করে কোষের ক্ষতি রোধ করে।
ব্রকলি দেখতে ফুলকপির মতো, কিন্তু গাঢ় সবুজ রঙের। এটি বিভিন্ন রঙে যেমন বেগুনি, হলুদ, পিংক ও সবুজ পাওয়া যায়; যার কুঁড়ি ও কাণ্ড সবজি হিসাবে খাওয়া হয়। পুষ্টি উপাদানের দিক থেকে ব্রকলি উচ্চমানের সবজি। এটি হার্টের অসুখ প্রতিরোধ এবং ডায়াবেটিক রোগের চিকিৎসায় সহায়ক। ব্রোকলি চাষ পদ্ধতি –
ব্রোকলির জাত পরিচিতি
ব্রোকলি আমাদের দেশে একটি নতুন সবজি। উন্নত বিশ্বের কিছু জাত যেমন—প্রিমিয়াম ক্রস, গ্রীন কমেট, জুপিটার ইত্যাদি চাষ করা যায়। লালতীর সীডস লিমিটেড ‘লিডিয়া’ নামে একটি জাত বাজারজাত করছে, যা দেশের আবহাওয়ার জন্য উপযোগী। জাতটি দ্রুত বর্ধনশীল, মাঝারি আকৃতির, তাপ সহিষ্ণু ও রোগ প্রতিরোধী এবং দেখতে আকর্ষণীয়।
ব্রোকলির বপন/রোপণ প্রযুক্তি
বীজ বপন
আমাদের দেশের আবহাওয়ায় ব্রোকলি চাষের উত্তম সময় হল আশ্বিন থেকে পৌষ মাস।
বীজ হার
চারা রোপণের আগে বিঘাপ্রতি (৩৩ শতক) প্রায় ৫০ গ্রাম বীজ বপন করে বীজতলায় চারা তৈরি করতে হবে। এরপর মূল জমিতে চাষের জন্য বিঘাপ্রতি ৬ হাজার চারা রোপণ করতে হবে।
রোপণ দূরত্ব
৪ থেকে ৫ সপ্তাহ বয়সের চারা সারি থেকে সারি ২২ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ১.৫ ফুট দূরত্বে রোপণ করা উচিত। পাশাপাশি দুটি বেডের মাঝে ১ ফুট চওড়া এবং ৬ ইঞ্চি গভীর নালা রাখতে হবে।
ব্রোকলি চাষে সার ব্যবস্থাপনা
ব্রোকলির ভাল ফলন পাওয়ার জন্য প্রতি শতকের জন্য নিম্নোক্ত হারে সার প্রয়োগ করতে হবে:
সারের নাম | সারের পরিমাণ/১শতকের জন্য |
---|---|
পচা গোবর/কম্পোস্ট | ৬০ কেজি |
টিএসপি | ০.৭৬ কেজি |
ইউরিয়া | ০.৪৫ কেজি |
এমওপি/পটাশ | ০.৬১ কেজি |
জিপসাম | ০.৩২-০.৪ কেজি |
দস্তা সার | ০.০৫ কেজি |
বোরণ | ০.০৪ কেজি |
প্রয়োগ পদ্ধতি
উপরোক্ত সার মূল জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। বিঘাপ্রতি ২ কেজি হারে রুটোন বা অন্য কোন শিকড় বর্ধনকারী হরমোন প্রয়োগ করতে হবে। জমি তৈরির সময় জিংক ও বোরন না প্রয়োগ করে চারা লাগানোর ২০ থেকে ২৫ দিন পর প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম লিবরেল জিংক ও ২০ গ্রাম লিবরেল বোরন একত্রে মিশিয়ে স্প্রে করা যায়। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করা উত্তম।
পরিচর্যা
ব্রোকলির চারা লাগানোর পর বাড়তি পরিচর্যা করতে হবে। জমিতে আগাছা হলে সাথে সাথে নিড়ানি দিতে হবে। মাঝে মাঝে নিড়ানি দিয়ে মাটি আলগা করতে হবে। এছাড়া সূর্যালোকের অতিরিক্ত তাপে ফুল হলুদাভ বর্ণ ধারণ করতে পারে, তাই চারপাশের পাতা দিয়ে ফুল ঢেকে দিতে হয়—এটি ব্লাচনিং নামে পরিচিত।
ব্রোকলি সংগ্রহ ও পরবর্তী করণীয়
ফসল সংগ্রহ
চারা রোপণের দুই মাসের মধ্যে ব্রোকলির অগ্রীয় প্রোপুষ্প মঞ্জুরী খাওয়ার জন্য সংগ্রহ করা যায়। সঠিক মানের জৈব হরমোন ব্যবহার করলে প্রায় ১০ দিন আগে ফসল সংগ্রহ করা যায়। ধারালো ছুরি দিয়ে ফুল কেটে সংগ্রহ করতে হয়। ১০ থেকে ১২ দিন পর পর্যায়ক্রমে বোঁটাসহ কক্ষীয় প্রোপুষ্প মঞ্জুরী সংগ্রহ করতে হয়।
ফলন
সঠিক পরিচর্যা করলে বিঘাপ্রতি ৫০-৬৫ মণ ফলন পাওয়া যায়।
- রুপচর্চায় মিষ্টিকুমড়া মাস্ক বানাবেন যেভাবে
- আম পাতা খেলে মুক্তি মিলবে যেসব রোগের
- ঢাকার সেরা ক্যান্সার ও অনকোলজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তালিকা
- গুড় খাওয়ার যত উপকারিতা