
মায়ের খাবার সরাসরি দুধের মাধ্যমে শিশুর শরীরে প্রভাব ফেলে। তাই নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মায়েদের এমন কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, যা শিশুর স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
নবজাতকের জন্য জীবনের প্রথম ছয় মাস মাতৃদুগ্ধ অপরিহার্য। এটি শুধু শিশুর পুষ্টিই নয়, বরং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কার্যকর। তবে মায়ের খাদ্যাভ্যাসের সরাসরি প্রভাব পড়ে দুধের পরিমাণ ও গুণগত মানে। তাই মায়েদের সতর্ক হতে হবে, শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় কিছু নির্দিষ্ট খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।
১. অতিরিক্ত ক্যাফেইন
- চা, কফি, কোলা বা এনার্জি ড্রিঙ্কে থাকা ক্যাফেইন দুধে চলে যেতে পারে।
- এটি শিশুর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে বা অতিরিক্ত উত্তেজিত করে তুলতে পারে।
- দিনে ১ কাপ কফির বেশি না খাওয়াই ভালো।
২. কাঁচা বা অপর্যাপ্তভাবে রান্না করা মাছ ও মাংস
- এতে ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
- এটি মা ও শিশুর উভয়ের জন্য ক্ষতিকর।
৩. অতিরিক্ত ঝাল বা মসলা
- অতিরিক্ত ঝাল খাবার মায়ের দুধের স্বাদ পরিবর্তন করতে পারে।
- এতে শিশুর পেটে গ্যাস বা অস্বস্তি হতে পারে।
৪. এলার্জিজনিত খাবার (যদি পারিবারিক ইতিহাস থাকে)
- যেমন: গরুর দুধ, ডিম, বাদাম
- শিশুতে অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শে এ ধরনের খাবার বাদ দিতে হতে পারে।
৫. ফাস্ট ফুড ও প্রসেসড খাবার
- এতে অতিরিক্ত সোডিয়াম, ট্রান্স ফ্যাট ও রাসায়নিক থাকে যা দুধের গুণমান নষ্ট করে।
- শিশুর পাচনতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
৬. মদ ও ধূমপান
- মায়ের দুধে অ্যালকোহল চলে যেতে পারে, যা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে ব্যাঘাত ঘটায়।
- ধূমপান শিশুর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, এমনকি পরোক্ষ ধোঁয়াও!
৭. কিছু ওষুধ
- অনেক ওষুধ মায়ের দুধের মাধ্যমে শিশুর শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
- যেকোনো ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৮. কৃত্রিম ও অতিরিক্ত চিনি
চিনিযুক্ত প্রসেসড খাবার ও কৃত্রিম চিনি এড়িয়ে চলা উচিত। বদলে গুড় ব্যবহার করুন, যা রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করে এবং পরোক্ষভাবে দুধের পরিমাণ বাড়ায়।
৯. পুদিনা বা মিন্টজাতীয় ভেষজ
পুদিনার মধ্যে থাকা কিছু উপাদান স্তন্যদুগ্ধ উৎপাদন হ্রাস করে। পুষ্টিবিদরা একে ‘অ্যান্টি-গ্যালাক্টোগক্স’ বলেন। তাই পুদিনা পাতা, মিন্ট লজেন্স ইত্যাদি এই সময় এড়িয়ে চলুন।
মায়েরা সহজপাচ্য, পুষ্টিকর ও ঘরোয়া খাবার খেতে চেষ্টা করুন। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় প্রচুর পানি পান করুন, বিশ্রাম নিন এবং নিজের যত্ন নিন।
সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর যত উপকারিতা

মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে তবেই শিশুর সুস্থ বৃদ্ধি সম্ভব। আপনার কোনো উপসর্গ বা সন্দেহজনক প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে ডাক্তার বা শিশু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
এই তথ্য শেয়ার করুন যাতে অন্য মায়েরা উপকৃত হন। আপনার প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করুন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।