গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কত থাকা উচিত, গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কত হলে ইনসুলিন নিতে হয়, গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কমানোর উপায়, গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে বাচ্চার কি ক্ষতি হয়, গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস এর লক্ষণ, গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস ডায়েট চার্ট, গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস এর মাত্রা, গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস পরীক্ষা।
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস – জেস্টেশনাল বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
অনেকের গর্ভধারণের আগে ডায়াবেটিস না থাকলেও গর্ভধারণের পর ডায়াবেটিস আক্রান্ত হতে পারে।
অনেকের গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার হার বেড়ে যায় এবং সন্তান প্রসবের পর তা স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসে, একে গর্ভকালীন বা জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বলে।
সাধারণত গর্ভাবস্থায় শরীর অতিরিক্ত চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত ইনসুলিন (যে উপাদান রক্তে শর্করার হার নিয়ন্ত্রণ করে ) তৈরি করত না পারায় এই লক্ষণ দেখা দেয়।
গর্ভধারণের সময় এটি দেখা গেলেও প্রথম তিনমাস পার হওয়ার পর থেকে এই ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
অনেক সময়ই সন্তান প্রসবের পর এই ধরণের ডায়াবেটিসের লক্ষণ চলে যায়।
ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রায় ৮ থেকে ১৩ শতাংশ নারী এমন গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে নানান সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
জেস্টেশনাল বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের লক্ষণ
জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের কোনো নির্দিষ্ট লক্ষণ নেই। কিছু নারীর রক্তে শর্করার হার অতিরিক্ত বেড়ে গেলে কয়েকটি লক্ষণ দেখা যেতে পারে:
- তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া
- অন্য সময়ের চেয়ে বেশি মাত্রায় প্রস্রাবের বেগ পাওয়া
- ঘন ঘন মুখ শুকিয়ে যাওয়া
- অল্প সময়ে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া
তাই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আছে কিনা সে সম্পর্কে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সময়মত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কারা গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটি এর ঝুঁকিতে থাকেন:
গর্ভাবস্থায় কিছু নারীর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে:
- যেসব নারীর অতিরিক্ত ওজনজনিত সমস্যা আছে
- গর্ভধারণের আগে সাড়ে ৪ কেজি বা তার চেয়ে বেশি ওজনের সন্তান প্রসব করে থাকলে।
- গর্ভধারণের আগের সন্তান প্রসবের সময় জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস হয়ে থাকলে।
- বাবা-মা বা ভাই-বোনদের মধ্যে কারো একজনের ডায়াবেটিস থাকলে।
যেভাবে জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস গর্ভাবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে
- গর্ভে শিশুর আকৃতি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হতে পারে। যার ফলে সন্তান প্রসবের সময় নানান জটিলতা তৈরি হতে পারে।
- পলিহাইড্রামনিওস বা গর্ভের ভেতরে শিশুকে ঘিরে অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড তৈরি হতে পারে যার ফলে সময়ের আগেই গর্ভবতী নারীর প্রসববেদনা শুরু হয় এবং প্রসবের সময় জটিলতা দেখা যায়।
- প্রিম্যাচিউর বার্থ বা নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান জন্ম হতে পারে।
- প্রি এক্ল্যাম্পসিয়া – যার ফলে গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং গর্ভধারণের সময়ও জটিলতাও দেখা দিতে পারে।
- জন্মগ্রহণের পর শিশুর রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যেত এপারে ও চোখ এবং চামড়া হলুদাভ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এমনকি মৃত সন্তান প্রসব করার মত সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
- পরবর্তী আবারো গর্ভধারণের সময়ও এই ধরণের ডায়াবেটিস হতে পারে।
- অনেক সময় রোগীর স্থায়ীভাবে টাইপ টু ডায়াবেটিসও হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে যা করণীয়
পরিবারের সদস্যদের কেউ যদি গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে এই ধরনের ডায়াবেটিস সম্পর্কে আগে থেকে সচেতন হওয়া জরুরি।
গর্ভধারণের আগে থেকেই জেস্টেশনাল বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলে দুশ্চিন্তা না করলেও চলবে।
তবে এমন ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে যদি গর্ভাবস্থায় সমস্যা হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলত হবে।
আরও পরুন
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে যৌন মিলনে কি গর্ভপাত হতে পারে?
গর্ভধারণের প্রথম দিকে গর্ভপাত হবার কারণ ও গর্ভপাতের উপসর্গ
গর্ভপাত প্রতিরোধ করার উপায় জেনে নিন।
গর্ভধারণের আগে গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ ঠেকাতে যা করবেন
গর্ভকালীন সেক্স প্ল্যানিং কেমন হবে?
গর্ভাবস্থায় যে উপসর্গগুলি দুশ্চিন্তার কারণ নয়
গর্ভবতী নারী করোনার সময়ে যা খাবেন।
গর্ভকালীন খাবারের তালিকা বা ডায়েট চার্ট।
গর্ভাবস্থায় যে খাবার গুলো অবশ্যই খাবেন না।
গর্ভাবস্থায় যে খাবার গুলো অবশ্যই খাবেন।
৬ থেকে ১২ মাস বয়সে শিশু কেমন ও কতবার খাবে।
৬ থেকে ১২ মাস বয়সী শিশুর খাবারের ক্ষেত্রে যা অবশ্যই মনে রাখবেন।
সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর যত উপকারিতা।