গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ কেন হয়? সুরক্ষায় যেসব সতর্কতা নিতে হবে? গর্ভধারণের প্রথম দিকে গর্ভপাত কি কারণ উপসর্গ ও প্রতিকার? গর্ভপাতের কারণ ও লক্ষণ, এর প্রতিরোধ ও চিকিৎসা?
গর্ভপাত এর জন্য এক জন নারীর গর্ভধারনের স্বপ্ন অংকুরেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। একজন নারীর জন্য গর্ভধারণের প্রথম দিকে গর্ভপাত অনেক কষ্টকর। তাই মিসক্যারেজ বা গর্ভধারণের শুরুর দিকে গর্ভপাত এর কারণ ও গর্ভপাতের উপসর্গ এখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
গর্ভধারণের প্রথম দিকে গর্ভপাত হবার কারণ?
বিশেষজ্ঞরা বলেন, মোট গর্ভপাতের প্রায় ২০% হয়ে থাকে গর্ভধারণের শুরুর দিকে। অকাল গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ হলো গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত হয়ে যাওয়া। বেশিরভাগ গর্ভপাত ঘটে প্রথম ১৪ সপ্তাহের মাঝে।
গর্ভধারণের শুরুর দিকে একজন মায়ের ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম বিভিন্ন প্রসেস এর মাধ্যমে বের হয়ে ফেলোপিওন টিউব হয়ে আস্তে আস্তে গর্ভাশয়ে আসে। শারীরিক মিলন হলে সঙ্গীর স্পার্ম বা শুক্রাণুর সাথে ডিম্বাণুর নিষেক হয়। এরপর নিষিক্ত জাইগোটে বিভাজন ঘটে। ৫ দিন পর ব্ল্যাস্টোসিস্ট তৈরি হয়। এটি ১০ দিনের মাথায় যেয়ে গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপিত হয়। তখন একজন নারীকে প্রেগন্যান্ট বলা হয়। এরপর ব্ল্যাস্টোসিস্ট টিস্যু ভেঙে পুষ্টি নেয়। যদি তখন পর্যাপ্ত পুষ্টি না পায়, তখন গর্ভপাত হয়ে যায়। এছাড়া গর্ভপাত এর আরো অনেক কারণ আছে।
গর্ভকালীন খাবারের তালিকা বা ডায়েট চার্ট।
গর্ভাবস্থায় যে খাবার গুলো অবশ্যই খাবেন না।
গর্ভাবস্থায় যে খাবার গুলো অবশ্যই খাবেন।
৬ থেকে ১২ মাস বয়সে শিশু কেমন ও কতবার খাবে।
৬ থেকে ১২ মাস বয়সী শিশুর খাবারের ক্ষেত্রে যা অবশ্যই মনে রাখবেন।
সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর যত উপকারিতা।
গর্ভধারণের প্রথম দিকে গর্ভপাত হওয়ার কারণসমূহ
- গর্ভধারণের প্রথম দিকে গর্ভপাত এর সঠিক কারণ জানা যায় নি। তবে ধারণা করা হয়, বাচ্চার ক্রোমোজমাল অস্বাভাবিকতার কারণে এটি হয়ে থাকে। আর এমন হয় ডিম্বাণু অথবা শুক্রাণুতে কোনো সমস্যা থাকলে অর্থাৎ জাইগোটে যখন বিভাজন হয়, তখন কোন সমস্যা হলে।
- গর্ভপাতের আরও কিছু কারণ হল হরমোনাল সমস্যা, মায়ের ইনফেকশন, অথবা মায়ের কোন অসুস্থতা, অস্বাভাবিক জীবন যাপন যেমন ধূমপান করা, ড্রাগ এডিক্টেড, পুষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত ক্যাফেইন খাওয়া, রেডিয়েশন অথবা বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসলে জাইগোট ভালোভাবে গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপিত না হওয়া।
- মায়ের বয়স বেশি হলে গর্ভপাত বেশি হবার সম্ভাবনা থাকে (৩৫ এর নিচে ১৫%, ৩৫-৪০ এ ২০-৩০%, ৪৫ এ ৫০% গর্ভপাত হবার সম্ভাবনা থাকে)।
- মায়ের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে।
- যার পুর্বে গর্ভপাত হয়েছে তার ২৫% সম্ভাবনা থাকে।
- মায়ের হার্ট বা কিডনিতে সমস্যা থাকলে।
- গর্ভবতীর থাইরয়েডে সমস্যা থাকলে।
গর্ভধারণের প্রথম দিকে গর্ভপাত হওয়ার উপসর্গ
কিছু কিছু উপসর্গ আছে যেগুলো দেখে বোঝা যায় যে গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ হচ্ছে কিনা!
রক্তপাত
যোনি দিয়ে হালকা বা অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া গর্ভপাত হওয়ার উপসর্গ। যদিও প্রেগন্যান্সির প্রথম দিকে খুব হালকা রক্তপাত হওয়া স্বাভাবিক। তবে অতিরিক্ত রক্ত গেলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
Cramping বা পেশীর সংকোচন বা ব্যথা
হালকা পেশীর সংকোচন জনিত ব্যথা গর্ভবস্থায় স্বাভাবিক। এটি সাধারণত অস্থায়ী ও অল্প সময়ের জন্য থাকে। যদি অতিরিক্ত ব্যথা হয় এবং প্রথমে পিঠের বা কোমড়ের দিকে ব্যথা হয়, ব্যথা অনেকক্ষণ স্থায়ী হয় এবং ব্যথার সাথে রক্তপাত হয় তবে সাথে সাথে ডাক্তার দেখাবেন।
পানি ভাঙা বা যোনি দিয়ে মিউকাস যাওয়া
যদি যোনি দিয়ে সাদা-গোলাপি রং এর মিউকাস বা পিচ্ছিল পদার্থ যায় অথবা হঠাৎ করে প্রচুর পানি যায় অথবা সলিড টিশ্যু বের হয় তাহলে গর্ভপাত হয়।
অন্যান্য
এছাড়া গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ এর অন্য উপসর্গ গুলো হল ওজন কমে যাওয়া, প্রেগন্যান্সির চিহ্ন গুলো হঠাৎ করে কমে পাওয়া এবং আল্ট্রাসাউন্ডে বাচ্চার হার্ট সাউন্ড না পাওয়া।
গর্ভপাত হয়ে গেলে চিকিৎসা কী?
রক্তপাত বন্ধ করা ও ইনফেকশন প্রতিহত করা হল প্রথম চিকিৎসা। সাধারণত গর্ভধারণের স্থায়িত্ব যত কম হয় শরীর ততো তাড়াতাড়ি ফিটাল ম্যাটারিয়াল সব বের করে দেয় তাই তখন মেডিকেল প্রসিডিউর দরকার হয় না। কিন্তু যদি শরীর নিজে নিজে বের না করে তখন D&C করতে হয়। এরপর বাসায় রক্তপাত মনিটর করতে হয়। যদি কাঁপুনি বা জড় আসে তাহলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে যৌন মিলনে কি গর্ভপাত হতে পারে?
গর্ভপাত প্রতিরোধ করার উপায় জেনে নিন।
গর্ভধারণের আগে গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ ঠেকাতে যা করবেন
গর্ভকালীন সেক্স প্ল্যানিং কেমন হবে?
গর্ভাবস্থায় যে উপসর্গগুলি দুশ্চিন্তার কারণ নয়