চাকরি প্রস্তুতি

বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা কি?- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বয়স

বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই সঠিকভাবে জানি না। আগে থেকে প্রিপারেশন নিতে হলে বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা কি?- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বয়স সম্পর্কে ভালভাবে ধারণা থাকা প্রয়োজন। আগে থেকে সঠিকভাবে জেনে নিন বিসিএস পরীক্ষার জন্য আপনার কি কি যোগ্যতা দরকার যেনো পরবর্তীতে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে বিপাকে না পরতে হয়।

বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা | BCS Exam Qualification

বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা নিয়ে আমাদের মাথায় অনেক রকম অনেক দুশ্চিন্তা থাকে। গ্রাজুয়েশন থেকেই আমাদের মাথায় এসব চিন্তাগুলো ঘুরপাক খেতে শুরু করে। তবে সমাধান একটাই। সঠিকভাবে জানা। মূলত চারভাবে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা যাচাই করা হয়। সেগুলো হলঃ

  • ন্যুনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা।
  • বয়সসীমা।
  • নাগরিকত্ব।
  • শারিরীক যোগ্যতা।

মাত্র এই চারটি দিক বিবেচনা করলেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনি বিসিএস দেওয়ার জন্য যোগ্য কিনা। নিচে এ বিষয়ে আলোচনা করা হল।

গণিত সিলেবাস এবং প্রস্তুতি গাইডলাইন – বিসিএস প্রিলিমিনারি

বিসিএস এর নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ

উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর চার বছরের অনার্স পাস হলে বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করা যায়। অর্থাৎ এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হলে অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে। স্নাতক ছাড়া এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যায় না।

এসএসসি থেকে স্নাতক পর্যন্ত সবগুলো পরীক্ষার যেকোন দুটিতে দ্বিতীয় শ্রেণী বা সমমান এবং ১টি তৃতীয় শ্রেণী বা সমমান এর নিচে পেলে সেই প্রার্থী বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারবেন না।

তবে কেউ যদি তিন বছরের অনার্স বা পাস কোর্সে পড়ে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই স্নাতকোত্তর বা মাস্টার্স পাস হতে হবে। তারপরে তিনি বিসিএস এ আবেদন করতে পারবেন।

জিপিএ থেকে শ্রেণী বের করার পদ্ধতিঃ

SSC এবং HSC এর ক্ষেত্রেঃ

৩ বা তদুর্ধ্ব = প্রথম শ্রেণী

২ থেকে ৩ এর কম= দ্বিতীয় শ্রেণী

১ থেকে ২ এর কম= তৃতীয় শ্রেণী

অনার্সের ক্ষেত্রেঃ

৩ বা তদুর্ধ্ব = প্রথম শ্রেণী

১.৬৫ থেকে ২.২৫ এর কম= তৃতীয় শেণী

বিসিএস এর বয়সসীমাঃ

এই বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা যাচাই করার জন্য নিদ্রিষ্ট বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

বিসিএস পরীক্ষার সার্কুলার দেওয়ার মাসের প্রথম তারিখে বিসিএস এ আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ২১-৩০ বছরের মধ্যে। অর্থাৎ পিএসসি যে মাসে এই পরীক্ষার সার্কুলার জারি করবে সেই মাসের ১ তারিখে ২১-৩০ বছরের মধ্যে বয়স থাকলে আপনি বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

তবে কিছু ক্ষেত্রে বয়স সীমা শিথিল যোগ্য-

  • মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলেমেয়েদের, প্রতিবন্ধীদের বা স্বাস্থ্য ক্যাডারের আবেদনকারীদের বয়সসীমা সাধারণের চেয়ে ২ বছর বেশি। ৩২ বছর পর্যন্ত এই প্রার্থীরা বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
  • আবার সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ক্যাডারে উপজাতিদের ২ বছর বয়সসীমা বেশি দেওয়া আছে। অর্থাৎ ৩২ বছর পর্যন্ত তাদের এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ আছে।

বিসিএস এর নাগরিকত্বঃ

যাচাই করার জন্য এটি নাগরিকত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারন বিসিএস এ আবেদন করতে পারবে কিনা তা দেশের নাগরিকত্বের উপরও নির্ভর করে। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব না থাকলে এই পরীক্ষায় আবেদন করা সম্ভব নয়। আবার সরকারের অনুমতি ছাড়া বিদেশি নাগরিককে বিয়ে করলেও বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করতে পারবেন না।

বিসিএস এর শারীরিক যোগ্যতাঃ

শারীরিক যোগ্যতা যাচাই এর আগে প্রিলিমিনারি, রিটেন ও ভাইভা পরীক্ষা দিতে হয়। এই পরীক্ষাগুলোতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে মূলত শারীরিক যোগ্যতা দেখা হয়। শারীরিক যোগ্যতার মধ্যে অনেকগুলো দিক রয়েছে। যেমনঃ ওজন, বক্ষ, চোখ, উচ্চতা, মূত্র পরীক্ষা ইত্যাদি সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও যদি মেডিকেল টেস্টে উত্তীর্ণ না হতে পারেন তাহলে আপনি বিসিএস নিয়োগ পাবেন না। তাই আগে থেকে এগুলো জেনে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য আপনার যথাসাধ্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

মেডিকেল টেস্টে সাধারণত যা যা টেস্ট করা হয়ে থাকেঃ 

  • উচ্চতা, ওজন ও বক্ষ পরিমাপ করা হয়।
  • দৃষ্টিশক্তি যাচাই করা হয়।
  • মূত্র পরীক্ষা করা হয়।

উচ্চতা, ওজন ও বক্ষ পরিমাপঃ

পুরুষঃ 

পুরুষ প্রার্থীর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন উচ্চতা ৫ ফুট  হতে হবে। সর্বনিম্ন ওজন ৪৯.৯৯ কেজি। তবে পুলিশ ও আনসার ক্যাডার এর জন্য সর্বনিম্ন উচ্চতা ও ওজন যথাক্রমে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ও ৫৪.৫৪ কেজি হতে হবে।

মহিলাঃ 

মহিলা প্রার্থীর জন্য সর্বনিম্ন উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি। মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন ওজন ৪৩.৫৪ কেজি। তবে পুলিশ ও আনসার ক্যাডার এর জন্য মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন উচ্চতা ৫ ফুট হতে হবে। সর্বনিম্ন ওজন ৪৫.৪৫ কেজি হতে হবে।

উল্লেখ্য যে, ওজন কম হলেও বাড়ানোর সুযোগ দেয়া হয়।

বক্ষ পরিমাপঃ

জুতাসহ উচ্চতা (সেঃমিঃ)পূর্ণ প্রসারণের মাধ্যমে বক্ষ পরিমাণ (সেঃমিঃ)সর্বোচ্চ প্রসারণের মাত্রা (সেঃমিঃ)
১৫২.৪০ থেকে ১৬৫.১০ সেঃমিঃ এর নিম্নে৭৬. ২০৫.০৮
১৬৫.১০ থেকে ১৭২.৭২ সেঃমিঃ এর নিম্নে৭৮.৭৪৫.০৮
১৭২.৭২ থেকে ১৭৭.৮০ সেঃমিঃ এর নিম্নে৮১.২৮৫.০৮
১৭৭.৮০ থেকে ১৮২.৮৮ সেঃমিঃ এর নিম্নে৮৩.৮২৫.০৮
১৮২.৮৮ সেঃমিঃ থেকে তদুর্ধ্ব৮৬.৩৬৫.০৮

মূত্র পরীক্ষাঃ মূত্র পরীক্ষা মেডিকেল টেস্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মূত্র পরীক্ষাগার থেকে সরাসরি রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। তারা রিপোর্ট দেখে মূত্র পরীক্ষার ফলাফল বের করে আনে।

দৃষ্টি শক্তি পরীক্ষাঃ

  মানদণ্ড ১

ডান চোখবাম চোখ
দূর দৃষ্টি ৬/৬৬/৬
নিকট দৃষ্টি পঠন০.৬/টি আই/ এন৫০.৬/যে আই / এন৫

মানদণ্ড ২

ত্রুটিমুক্ত চোখত্রুটিপূর্ণ চোখ
দূর দৃষ্টি ৬/৬গ্লাস/চশমা ছাড়া ৬/৬০ এর নিম্নে নহে সংশোধিত হওয়ার পর চশমাসহ ৬/১২ এর নিচে নহে
নিকট দৃষ্টি পঠন ০.৬/টি আই/ এন৫১/টি ২/ এন৬

মানদণ্ড ৩

ত্রুটিমুক্ত চোখত্রুটিপূর্ণ চোখ
দূর দৃষ্টিগ্লাস/চশমা ছাড়া ৬/৬০ এর নিম্নে নহে সংশোধিত হওয়ার পর চশমাসহ ৬/৬ এর নিচে নহেগ্লাস/চশমা ছাড়া ৬/৬০ এর নিম্নে নহে সংশোধিত হওয়ার পর চশমাসহ ৬/১২ এর নিচে নহে
নিকট দৃষ্টি পঠন ০.৬/টি আই/ এন৫১/টি৪/এন৮

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল টিম গঠন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালক। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কোন প্রার্থী অযোগ্য বিবেচিত হলে তা প্রার্থীকে এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কে জানানো হয়।

বিসিএস

Related Articles

Back to top button
error: