পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে এবং কত টাকা লাগে, পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৪, ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, বাংলাদেশে পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, নতুন পাসপোর্ট বানাতে কি কি লাগে, ইন্ডিয়ান পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে, ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, স্টুডেন্ট পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।
পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ও ফি – Mrp পাসপোর্ট নবায়ন করার নিয়ম
কি কি লাগে পাসপোর্ট করতে , পাসপোর্ট করার নিয়ম, পাসপোর্ট আবেদন ফরম ২০২২, ই পাসপোর্ট করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, পাসপোর্ট আবেদন ফরম ডাউনলোড, ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট, ই পাসপোর্ট করার নিয়ম
পাসপোর্ট শব্দের উৎপত্তি হল ফরাসী ভাষা থেকে। পাসপোর্ট করার নিয়ম, পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে, ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, স্টুডেন্ট পাসপোর্ট করতে এবং পাসপোর্ট করতে যা যা লাগে তা সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা উচিত।
পৃথিবীর যেকোনো দেশে একজন ব্যাক্তির নাগরিকত্ব পরিচয় এর স্বীকৃতি দিয়ে থাকে পাসপোর্ট।
সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস ঢাকা বিভাগের শাখা সমূহ ও হেল্পলাইন নাম্বার
বাংলাদেশী পাসপোর্ট কি
বাংলাদেশী পাসপোর্ট হল বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য বিদেশ ভ্রমনের একটি অফিসিয়াল দলিল। জন্ম বা অভিবাসন সূত্রে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের নাগরিকদের পাসপোর্ট দিয়ে থাকেন।
বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিস বা বিদেশে বাংলাদেশী দূতাবাস থেকে এই পাসপোর্ট দেয়া হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে ইসরায়েল ছাড়া অন্য যে কোন দেশে ভ্রমন কিংবা প্রবেশ করা যায় বৈধ ভাবে।
পাসপোর্ট কি কি ধরনের হয়ে থাকে ?
পাসপোর্ট মূলত তিন ধরণের হয়। যেমন –
১. হাতে লিখা পাসপোর্ট
২. মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP – Machine Readable Passport)
৩. ই-পাসপোর্ট (E-Passport)
হাতে লিখা পাসপোর্ট
হাতে লিখা পাসপোর্ট হল বেশ পুরনো সময়ের পাসপোর্ট । কিছু কিছু দেশে এখনো হাতে লেখা পাসপোর্ট এর প্রচলন আছে।
বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের পর থেকে আর কোনো হাতে লিখা পাসপোর্ট ইস্যু করছে না। তার বদলে বাংলাদেশ নিয়ে এসেছে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা MRP। হাতে লেখা পাসপোর্ট যদি থাকে তবে তা নবায়ন করে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করা হচ্ছে।
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP – Machine Readable Passport)
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা MRP হল একটি নির্দিষ্ট যন্ত্র বা মেশিন দ্বারা শনাক্ত করা যায় এমন পাসপোর্ট। এই পাসপোর্টের সকল তথ্য মেশিন শনাক্ত করতে পারে।
বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সাল থেকে MRP পাসপোর্ট দেয়া শুরু করেছে। এই পাসপোর্টের কোথাও ব্যাক্তির বিস্তারিত তথ্য থাকে না বরং এর পরিবর্তে পাসপোর্ট এর একটি বিশেষ অংশে সংকেত এর মতো থাকে যা দেখে কিছুই বুঝা যায় না। এই অংশে তথ্যগুলো “coded” থাকে।
ইমিগ্রেশন অফিসাররা যন্ত্রের সাহায্যে তথ্যা এবং ব্যাক্তির পরিচয় নিশ্চিত করেন। এর ফলে ভুয়া পাসপোর্ট অপরাধ অনেক কমে গিয়েছে।
পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে ?
পাসপোর্ট আবেদন দুই ধরণের হয়ে থাকে। সাধারণ ও জটিল। এই আবেদন এর ধরণের উপর পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ নির্ভর করে।
সাধারণ পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে ফি হল ৪০২৫ টাকা। ২১ কর্ম দিবসের মধ্য পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার তারিখ দিয়ে থাকে এমন পাসপোর্টে।
তবে নিজে করলে ২১ দিনে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সাধারণত ৪০-৫০ দিনের মতো সময় লাগে। তবে এর আগেও অনেকে পেয়ে যান ভাগ্য ভালো থাকলে।
জরুরী পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ফি হল ৮৬২৫ টাকা। ২ কর্ম দিবসের মধ্যে সুপার এক্সপ্রেস এর মাধ্যমে হাতে পাওয়ার তারিখ দিয়ে থাকে। যদিও নিজে করলে ১৫-২০ দিনের মতো সময় লেগে যায়।
পাসপোর্ট করার নিয়ম
পাসপোর্ট করতে হলে অফিসিয়াল কিছু নিয়মএবং ধাপ মেনে চলতে হয়। যেমনঃ
- ফি জমা দেয়া
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করা
- পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ করা
- পাসপোর্ট ফরম এবং সংযুক্তি সত্যায়িত করা
- আবেদন ফরম পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়া
- পুলিশ ভেরিফিকেশন হওয়া
- পাসপোর্টের স্ট্যাটাস চেক করা
- শেষে পাসপোর্ট সংগ্রহ করা
পাসপোর্ট ফি জমা
পাসপোর্টের কাজ শুরু হয় পাসপোর্ট ফি জমা দেয়ার মাধ্যমে। পাসপোর্টের ফি অনলাইন-অফলাইন এই দুইভাবে দেয়া যায়।
অফলাইন অর্থাৎ পাসপোর্ট অফিসে যেয়ে আবেদন করলে ফি জমা দিতে হবে ব্যাংক-এ।
আর অনলাইনে আবেদন করলে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শেষে সেখান থেকে পাসপোর্ট ফি জমা দেয়ার অপশন থাকে। পাসপোর্ট ফি বা খরচ নির্ভর করে কতো দিনের ভিতর আপনি পাসপোর্ট পেতে চান তার উপর।
পাসপোর্ট পাওয়ার দু-ধরণের সুযোগ আছে। সাধারণ পাসপোর্ট – এক্ষেত্রে ২১ বা এর থেকে বেশি সময়ে পাসপোর্ট হাতে আসে। জরুরী পাসপোর্ট – এক্ষেত্রে ২-৭ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
বিভিন্ন পাসপোর্টের ফি সমূহ
৪৮ পাতার ৫ বছর মেয়াদ সম্বলিত পাসপোর্ট
পাসপোর্টের ধরণ | কর্মদিবস | টাকা |
সাধারণ পাসপোর্ট | ১৫ | ৪,০২৫ টাকা |
জরুরী পাসপোর্ট | ৭ | ৬,৩২৫ টাকা |
অতি জরুরী পাসপোর্ট | ২ | ৮,৬২৫ টাকা |
৪৮ পাতার ১০ বছর মেয়াদ সম্বলিত পাসপোর্ট
পাসপোর্টের ধরণ | কর্মদিবস | টাকা |
সাধারণ পাসপোর্ট | ১৫ | ৫,৭৫০ টাকা |
জরুরী পাসপোর্ট | ৭ | ৮,০৫০ টাকা |
অতি জরুরী পাসপোর্ট | ২ | ১০,৩৫০ টাকা |
৬৪ পাতার ৫ বছর মেয়াদ সম্বলিত পাসপোর্ট
পাসপোর্টের ধরণ | কর্মদিবস | টাকা |
সাধারণ পাসপোর্ট | ১৫ | ৬,৩২৫ টাকা |
জরুরী পাসপোর্ট | ৭ | ৮,৬২৫ টাকা |
অতি জরুরী পাসপোর্ট | ২ | ১২,০৭৫ টাকা |
৬৪ পাতার ১০ বছর মেয়াদ সম্বলিত পাসপোর্ট
পাসপোর্টের ধরণ | কর্মদিবস | টাকা |
সাধারণ পাসপোর্ট | ১৫ | ৮,০৫০ টাকা |
জরুরী পাসপোর্ট | ৭ | ১০,৩৫০ টাকা |
অতি জরুরী পাসপোর্ট | ২ | ১৩,৮০০ টাকা |
ব্যাংক-এ পাসপোর্ট ফি জমা
অফলাইনে আবেদন এর ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অফিস এর নির্ধারিত টাকা ব্যাংক এ যেয়ে জমা দিতে হয়। পাসপোর্টের টাকা জমা দেয়ার জন্য একটি স্লিপ দেয়া হয়। যাতে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে স্লিপ সহ টাকা জমা দেয়া হয়।
টাকা জমা দেয়ার পর ব্যাংক দুই পার্টের একটা রশিদ দিয়ে থাকে। এর এক পার্ট কাস্টমার কপি এবং অন্য পার্ট হল পাসপোর্ট অফিসের কপি। পাসপোর্ট আবেদন ফর্মের উপর আঠা দিয়ে লাগাতে হয়। টাকা জমা দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু লক্ষণীয় বিষয় –
- যে এলাকার পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট করানো হয় সে এলাকার ব্যাংক শাখায় টাকা জমা দেয়া ভালো।
- পেমেন্ট ভ্যারিফিকেশনে সুবিধার জন্য ব্যাংক স্লিপ এবং পাসপোর্ট-এ একই নাম ব্যবহার করা।
- টাকা জমা দেয়ার ৬ মাস এর ভিতর পাসপোর্টের আবেদন না করলে নতুন করে ব্যাংক এ টাকা দিতে হবে।
- মানি রিসিট এর ট্রানজেকশন নাম্বারটি গুরুত্বপূর্ণ তাই এটি সংরক্ষন করতে হবে।
- রিসিট-এর নির্দেশনা ভালোভাবে পড়লে পাসপোর্ট ফর্মের এর কিছু বিভ্রান্তি দূর হয়।
যে যে ব্যাংক গুলোতে পাসপোর্ট করার টাকা জমা দেয়া যায় সেগুলো হলো –
- সোনালি ব্যাংক
- প্রিমিয়ার ব্যাংক
- ট্রাস্ট ওয়ান ব্যাংক
- ব্যাংক এশিয়া
- ওয়ান ব্যাংক
- ঢাকা ব্যাংক
অনলাইন আবেদনে ফি জমা দেয়া
অনলাইনে পাসপোর্ট ফি জমা দেয়ার জন্য পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হয়। এরপর সঠিক তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে।
শেষের দিকে ব্যাংক এর বিভিন্ন গেটওয়ের(ব্যাংক কার্ড, বিকাশ বা রকেট) মাধ্যমে পেমেন্ট করা যায়। ব্যাংক তাদের ফি হিসেবে খুব সামান্য (৩-৫ টাকা) টাকা কেটে রাখে।
এক্ষেত্রে টাকা পে করার পর একটা ফরম পাওয়া যায়। এই ফরম এর পেইজ দুইটা প্রিন্ট করে একটা নিজের জন্য রাখতে হবে। অন্যটি পাসপোর্ট ফরম এর জন্য ব্যবহার করতে হবে।
আরেকটি পেমেন্ট পদ্ধতি হল ই-চালান এর মাধ্যমে। এখানে সোনালী ব্যাংকের কার্ড, ভিসা, মাস্টারকার্ড, ডিবিবিএল নেক্সাস কার্ড, কিউক্যাশ, রকেট ও বিকাশ ব্যবহার করে ফি দেয়া যায়।
পাসপোর্টের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা
পাসপোর্ট করার নিয়ম এর মধ্যে আবেদনের জন্য কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়। চলুন জেনে নেয়া যাক পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে।
- পাসপোর্ট ফরম পূরণকৃত – ২ কপি
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি – ২ কপি
- ন্যাশনাল আইডি কার্ড/স্মার্ট কার্ড অথবা জন্ম নিবন্ধন এর সত্যায়িত ফটোকপি
- ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, গাড়িচালক ও অন্যান্য পেশার লোকদের ক্ষেত্রে পেশাগত সনদের
সত্যায়িত ফটোকপি - সরকারী চাকুরীজীবীদের জন্য No Objection Certificate (NOC) বা Government Order(GO) সরকারি আদেশ জমা দিতে হয়
- নাগরিক সনদপত্র (আসল বা সত্যায়িত ফটোকপি).
আবেদন পত্র জমা দেয়ার সময় সকল কাগজের মূল কপি সাথে রাখলে ভালো হয়। অনেকসময় আবেদন গ্রহনের সময় এটা দেখতে চায়।
পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ
সাধারণত অফলাইন ও অনলাইন দুই ভাবে পাসপোর্টের আবেদন ফরম পূরণ করা যায়।
অফলাইনে পাসপোর্টের আবেদন ফরম পূরণ করতে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ফরম চাইলে অফিস থেকে তা বিনামূল্যে দেয়া হয়।
পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেয়ে Download Form অপশন-এ গিয়ে DIP Form1 ওপেন করে pdf ফরমেটে download করে ফর্মটি print করে নিন।
হাতে লিখে ফরম পূরণ করা হয় বলে কয়েক কপি করে করে রাখা ভালো। এতে লিখায় কোন ভুল হলে তা সুন্দর করে আবার লিখা যায়।
অনলাইনে ফরমপূরণ এর ক্ষেত্রে
অনলাইনে ফর্ম ফিলাপ করতে প্রথমে ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এরপর এখানে দেয়া সব তথ্য ঠিকমতো পড়ে নিন।
‘I have read the above information & the relevant guidance notes’ লিখা box-এ চেক মার্ক করে Continue to online enrolment বাটনে ক্লিক করলে আপনাকে ফর্ম পূরনের পেইজে নিয়ে যাবে।
এই ধাপে ব্যাক্তিগত সব তথ্য ভালো করে চেক করে দিতে হয় যাতে কোন ভূল না হয় বা কোন ফেইক ইনফরমেশন না থাকে।
পাসপোর্ট করার নিয়ম এর সর্বশেষ ধাপে আপনাকে আপনার পেমেন্ট ইনফরমেশন দিতে হবে। সেখানে যেয়ে অফলাইন সিলেক্ট করতে হয়, এরপর যে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েছেন তার ব্রাঞ্চ সিলেক্ট করতে হয়। আপনার টাকা জমা দেয়া ব্রাঞ্চ লিস্টে খুজে না পেলে সেন্ট্রাল ব্রাঞ্চ ব্যাবহার করতে হবে।সব শেষে ব্যাংকের জমা রিসিটের নাম্বার দিতে হবে।
আর অনলাইনেই ফি দিতে চাইলে ঘরে বসেই অন্য ব্যাংকগুলোর একটা সিলেক্ট করে ফি জমা দেয়া যাবে।
এই তো আপনার ফর্ম ফিলাপ হয়ে গেল। এবার ফর্মটি ডাউনলোড করে দুই সেট প্রিন্ট করুন।
মনে রাখবেন প্রিন্ট কাগজের উভয় দিকে হবে মানে এপিঠ-ওপিঠ প্রিন্ট হবে। অর্থাৎ এক সেটে পেইজ থাকবে দুটো এবং পৃষ্টা নাম্বার হবে ৪ অর্থাৎ এপিঠ-ওপিঠ প্রিন্ট হবে।
হাতে লেখার ফরমটা যেভাবে প্রিন্ট করা হয় ঠিক তেমন হবে এইটাও। এক সেট পাসপোর্ট অফিস রাখবে আরেক সেট পুলিশ ভ্যারিফিকেশনের জন্য SB OFFICE-এ পাঠানো হবে।
ফর্মের ছবি লাগানোর জায়গায় আঠা দিয়ে পাসপোর্ট সাইজের সদ্য তোলা ছবি লাগিয়ে নিন প্রিন্ট হয়ে গেলে। ২ সেটের জন্য ছবি ২ কপি দিতে হবে।
আর যে কোন একটা কপিতে আপনাকে ব্যাংক থেকে যে রশিদটি দেয়া হয়েছিলো সেটার পাসপোর্ট অফিস কপি পার্টটা কেটে আঠা দিয়ে হাতের ডান দিকের উপরের দিকে লাগিয়ে রাখতে হবে।
ছবি এবং রিসিট কোন ভাবেই পিন দিয়ে লাগাবেন না, অবশ্যই অবশ্যই আঠা দিয়ে লাগাবেন।
পাসপোর্ট করার নিয়ম ফরম ও কাগজপত্র সত্যায়িত করা
সঠিক ভাবে ফরম রেডি হলে এর পরের ধাপ সেগুলো সত্যায়িত করা।
দুই সেট আবেদন ফরম এর সাথে জন্ম নিবন্ধন / জাতীয় পরিচয় পত্র, নাগরিক সনদের ফটোকপি পিন দিয়ে লাগিয়ে নিন। এখন ফর্মের সেট দুটি পাসপোর্ট অফিসের যে কারো কাছ থেকে সত্যায়িত করে নিন।
যেসকল ব্যাক্তি পাসপোর্ট ফরম ও কাগজ সত্যায়িত করতে পারবেন তারা হলেন –
সংসদ সদস্য, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, ডেপুটি মেয়র, কাউন্সিলরগণ, গেজেটেড কর্মকর্তা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, উপজেলা/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও পৌর কাউন্সিলরগণ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক, নোটারী পাবলিক ও স্বায়ত্তশাসিত/আধাসরকারি/রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার জাতীয় বেতন স্কেলের ৭ম ও তদুর্ধ্ব গ্রেডের গ্রেডের কর্মকর্তাগণ।
পাসপোর্ট অফিসে আবেদন ফরম জমা দেয়া
আবেদন ফরম সত্যায়িত হয়ে গেলে এর পর তা পাসপোর্ট অফিসে জমা দেয়া। অনলাইনে ফরম পূরণ করা হলে ফরমেই লিখা থাকবে তা কোন অফিস এ জমা দিতে হবে।
তবে যদি হাতে পূরন করে থাকেন তবে আপনার ঠিকানা সিটি কর্পোরেশন এর ভেতর হলে রিজিওনাল অফিসে আর সিটি কর্পোরেশন এর বাইরে হলে তা আঞ্চলিক অফিসে জমা দিতে পারবেন।
পাসপোর্ট অফিসে ফর্ম গুলোর দুই সেট নিয়ে চলে যাবেন। সাথে অবশ্যই সব কিছুর অরিজিনাল কপি রাখবেন, অনেক সময় তা দেখতে চায়। তখন দেখানোর প্রয়োজন পড়তে পারে।
আপনার সিরিয়াল নাম্বার আসলে ফর্ম গুলো জমা দিন। তারা আপনার ফর্ম চেক করে দেখবেন। যদি ফর্মে কোন ভূল থাকে, তারা দেখিয়ে দিবে যে কোথায় ভূল হয়েছে। ভূল হলে সেটা ঠিক করে দিন।
আপনাকে কিছু প্রশ্ন করতে পারেন, সেগুলোর উত্তর আত্মবিশ্বাস এর সাথে দিবেন।সব কিছু ঠিক থাকলে আপনার আবেদন জমা নেয়া হবে। এরপর কোন রুমে যেতে হবে সেটা বলে দিবে। সেখানে গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ, ছবি তুলতে হবে, এবং ডিজিটাল সিগনেচার দিয়ে একটা রশীদ দেয়া হবে।
রশিদটি ভালো করে দেখুন যে ইনফরমেশনে কোন ভুল আছে কি না। কারণ এই রশিদে যে ইনফরমেশন দেখাবে আপনার পাসপোর্টে তা হুবুহু তাই প্রিন্ট হবে।
তাই কিছু ভূল পেলে সাথে সাথে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানান।
কারণ পাসপোর্ট প্রিন্ট হয়ে গেলে তা আর সংশোধন করতে পারবেন না। ভুল শুধরানোর জন্য আবার আরেকটি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা লাগবে। তার মানে আরো সময় ও টাকা দুই লাগবে।
তাছাড়া মৌলিক তথ্যগুলো এখন সংশোধন করা যায় না। এই রশীদটি যত্ন করে রাখুন কারণ পাসপোর্ট তৈরি হলে আনার সময় এই রশীদ জমা দিতে হয়।
পুলিশ ভেরিফিকেশন
আবেদন পত্র জমা দেয়ার কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশ ভ্যারিফিকেশন হবে। পুলিশ পাসপোর্ট আবেদনকারীর বাড়িতে আসতে পারে অথবা আবেদনকারীকে তাদের অফিসেও যেতে বলতে পারে।
এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে কিছু ডকুমেন্ট তৈরি রাখতে বলা হয়। যেমন, জায়গা/জমির কাগজ, ইউটিলিটি বিলের কপি ইত্যাদি। সাধারণত ব্যাক্তিভেদে একেক জনের কাছে একেকটা চাওয়া হয়।
পাসপোর্ট আবেদন ফর্মে যদি স্থায়ী ঠিকানা এবং বর্তমান ঠিকানা ভিন্ন হয় তবে দুই জায়গাতেই ভেরিফিকেশন হয়ে থাকে। আর একই ঠিকানা হলে এক জায়গাতে হয়।
পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক
অনলাইনে মাঝে মাঝে ঢুকে আপনার পাসপোর্ট এখন কোন অবস্থায় আছে তা চেক করতে পারবেন।
এই লিঙ্কে গিয়ে আপনার এনরোলমেন্ট আইডি (পাসপোর্ট এর ছবি তোলার পরে আপনাকে যে রশিদ দেয়া হবে সেখানে লিখা থাকবে) এবং জন্ম তারিখ দিতে হয়।
তখন আপনার পাসপোর্ট এর স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন। এছাড়া স্ট্যাটাস চেক এসএমএস করেও জানা যায়।
পাসপোর্ট সংগ্রহ করা
সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার পাসপোর্টের ধরন অনুযায়ী ৭ দিন বা ২০-৩০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাবেন।
পাসপোর্ট তৈরি হলে আপনাকে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে জানানো হবে। তাছাড়া অনলাইনে স্ট্যাটাস চেক করেও জানতে পারবেন। তাছাড়া কোনো ধরনের ভুল থাকলে পাসপোর্টে সংশোধনের প্রক্রিয়া রয়েছে।
পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ, পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এসব নিয়ে পরিপূর্ণ ধারণা দিতে এই আর্টিকেল। তাছাড়া পাসপোর্ট নবায়ন এর উপায় জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন।