সালাতুল হাজত নামাজে বিশেষ প্রয়োজন পূরণ ও দুশ্চিন্তা দূর হয়। প্রয়োজনে বা বিশেষ উদ্দেশ্যে বা বিপদমুক্তির জন্য এই নামাজ আদায় করা হয়।
সালাতুল হাজত কী?
কোন হালাল চাহিদা পুরনের জন্য আল্লাহ’র সন্তষ্টির উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল সালাত আদায় করাকে “সালাতুল হাজত” বলা হয়।
( ইবনু মাজাহঃ হা/১৩৮৫)
সালাতুল হাজতের ফজিলত
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে কোনো প্রয়োজন পূরণে এ নামাজ পড়তেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে এ নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে পাকে এ নামাজ পড়ার গুরুত্ব রয়েছে-
হজরত হুজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে যখন গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রয়োজন বা বিষয় (বিপদ-আপদ) চলে আসতো; তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।’ (আবু দাউদ)
সালাতুল হাজত কখন পড়বেন
কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে বা শারীরিক-মানসিকভাবে কোনো দুশ্চিন্তা দেখা দিলে এ নামাজ পড়তে হয়।
নিষিদ্ধ সময় (সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত, দ্বিপ্রহর) ও মাকরুহ সময় ছাড়া অন্য যেকোন সময়ে পড়তে পারেন।
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ত
সালাতুল হাজতের ২ রাকাত নফল নামায পড়ছেন এটা মনে মনে নিয়ত করবেন
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম
সালাতুল হাজত নামাজের আলাদা কোনো নিয়ম নেই।
স্বাভাবিক নামাজের মতোই উত্তমভাবে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বেন।
নামাজ শেষে সালাম ফিরানোর আগে আল্লাহ তায়ালার হামদ ও ছানা (প্রসংসা) এবং নবী করিম (সা.)-এর ওপর মুহাব্বত নিয়ে দরুদ শরিফ পাঠ করে প্রয়োজনের বিষয়টির কথা নিয়তের মধ্যে এনে নিচের দুআর যেকোন ১টি পড়বেন:
সালাতুল হাজতের দোয়াঃ
(ُ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ)
(রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হা’সানাতাও ওয়া ফিল আখিরতি হা’সানাতাও ওয়া ক্বিনা আ’জাবান্নার)
অথবা –
ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ
ﺍﻟْﺤَﻠِﻴﻢُ ﺍﻟْﻜَﺮِﻳﻢُ ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺮْﺵِ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴﻢِ
ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻣُﻮﺟِﺒَﺎﺕِ ﺭَﺣْﻤَﺘِﻚَ
ﻭَﻋَﺰَﺍﺋِﻢَ ﻣَﻐْﻔِﺮَﺗِﻚَ ﻭَﺍﻟْﻐَﻨِﻴﻤَﺔَ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺑِﺮٍّ ﻭَﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻣَﺔَ
ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺇِﺛْﻢٍ ﻟَﺎ ﺗَﺪَﻉْ ﻟِﻲ ﺫَﻧْﺒًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﻏَﻔَﺮْﺗَﻪُ ﻭَﻟَﺎ ﻫَﻤًّﺎ ﺇِﻟَّﺎ
ﻓَﺮَّﺟْﺘَﻪُ ﻭَﻟَﺎ ﺣَﺎﺟَﺔً ﻫِﻲَ ﻟَﻚَ ﺭِﺿًﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﻗَﻀَﻴْﺘَﻬَﺎ ﻳَﺎ
ﺃَﺭْﺣَﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺣِﻤِﻴﻦَ
উচ্চারণ: লা-ইলাহা ইল্লাহুল হা’লিমুল কারিম। সুবহানাল্লাহি রব্বিল আ’রশিল আ’জিম। আলহা’মদুলিল্লাহি রব্বিল আ’লামিন। আছআলুকা মুজিবাতি রহ’মাতিকা ওয়া আ’যা-ইমা মাগফিরতিকা ওয়াল গনিমাতা মিং কুল্লি বিররিউ ওয়াস সালামাতা মিং কুল্লি ইছমি। লা তাদাঅা’লি- জাম্বান ইল্লা গফারতাহু ওয়ালা হাম্মান ইল্লা ফার্- রজতাহু ওয়ালা হা’জাতান হি-ইয়া লাকা রিদান- ইল্লা ক্ব-দাইতাহা ইয়া আর হামার রহিমীন।
(তিরমিজি, মিশকাতঃ হা/৮৭৩, আবু দাউদঃ ১৩১৯; সালাত অধ্যায়-২)
যখন সালাতুল হাজতের দোয়া পড়বেন তখন আপনার প্রয়োজনের কথা মনে মনে স্মরণ করবেন।
দোয়ার ক্ষেত্রে হাদিস শরিফে বর্ণিত এসব দোয়া অন্যান্য দোয়ার সঙ্গে সাধারণ নামাজের শেষেও বিশেষভাবে পড়া যেতে পারে। এই দোয়াটি পড়তেই হবে— বিষয়টি এমন নয়। আপনি আপনার মতো করে দোয়া করলেও কোনো অসুবিধা নেই।
আল্লাহ তাআলা সকল মুসলিম উম্মাহকে কঠিন বিপদে সালাতুল হাজাত ও দরূদ পড়ে এ দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।