স্বাস্থ্য ও রূপ চর্চা

থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায় ঘরোয়া পদ্ধতিতে

থাইরয়েড নরমাল কত, ঔষধ ছাড়া থাইরয়েড কমানোর উপায়, হাইপার থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায়, শুকনো থাইরয়েড কমানোর উপায়, থাইরয়েড কমানোর ঔষধ, থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা, থাইরয়েড কমানোর ব্যায়াম, থাইরয়েড কমানোর হোমিও ঔষধ ।

থাইরয়েড থেকে মুক্তির উপায় ঘরোয়া পদ্ধতিতে

এই থাইরয়েড হরমোনের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। শরীরে এর থেকে কম বা বেশি হরমোন উৎপাদন হলেই নানাণ বিরূপ প্রভাব দেখা যায়। তবে আপনি চাইলেই থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যারা থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন তারা ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-

১. জাঙ্ক ফুড পরিহার করুণ

জাঙ্ক ফুড এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে এড়িয়ে চলুন। এই খাবার গুলি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

২. অগোছালো জীবনযাপনকে না বলুন

বর্তমান সময়ে শারীরিক ও মানসিক নানা সমস্যা হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হল, অগোছালো জীবনযাপন করা। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করে স্বাস্থ্য ভালো রাখা অত্যন্ত জরুরি। এর ফলে শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরি ঝরে এবং শরীর সুস্থ থাকে।

৩. ধীরেসুস্থে খাবার খান

খাবার খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো না করে বরং ধীরেসুস্থে ভালো করে চিবিয়ে খেতে হবে। মনোযোগ দিয়ে খাবার ভালো করে চিবিয়ে খেলে থাইরয়েড এবং মনের মধ্যে সংযোগ গড়ে উঠে। থাইরয়েড গ্রন্থি শরীরের বিপাক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই ধীরেসুস্থে খাবার চিবিয়ে খেলে তা বিপাক ক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করে।

৪. শাকসবজি খান

এমন কিছু শাকসবজি আছে যেগুলি কাঁচা অবস্থায় খেলে থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ ব্যাহত হয়, যেমন – বাঁধাকপি, ব্রকলি, ব্রাসেলস স্প্রাউট, ফুলকপি ইত্যাদি। এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খেলে থাইরয়েড গ্রন্থির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে তাই কাঁচা বা স্যালাদ হিসেবে না খেয়ে, রান্না করে খান।

৫. নারকেল তেল

নারকেল তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা বাড়ায়।

৬. অ্যাপেল সিডার ভিনেগার

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার হরমোন উৎপাদনের ভারসাম্যতা বজায় রাখে ফলে বিপাকের উন্নতি হয়। এছাড়াও, এটি শরীরের ফ্যাট নিয়ন্ত্রণ এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলি বের করে দেয়।

৭. আদা

আদায় বিভিন্ন রকম খনিজ যেমন- পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায় যা থাইরয়েডের সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে। থাইরয়েডের সমস্যা কমাতে নিয়মিত আদা চা খান।

থাইরয়েড

৮. ভিটামিন বি

থাইরয়েডের ক্ষেত্রে ভিটামিন বি খুবই কার্যকরি। বিশেষ করে ভিটামিন বি১২ হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য কাজে দেয়। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম, মাছ, মাংস, দুধ, বাদাম অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করুন যা পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি সরবরাহ করবে।

৯. ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডি এর অভাবে থাইরয়েডের সমস্যা হতে পারে। সূর্যের আলোই একমাত্র ভিটামিন ডি প্রস্তুত করতে পারে শরীরে। দিনে অন্তত পক্ষে ১৫ মিনিট সূর্যের আলোয় থাকুন যার ফলে শরীরে ক্যালসিয়ামের শোষণ হবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ কিছু খাবার হল – স্যালমন, ম্যাকারেল, দুগ্ধজাতীয় দ্রব্য, কমলালেবুর রস, ডিমের কুসুম ইত্যাদি।

১০. দুধ, পনির, দই

দুধ, পনির, দই জাতীয় দুগ্ধজাত খাবার থাইরয়েডের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এই সব খাবারে আয়োডিন এবং খনিজ অনেক থাকে যা থাইরয়েডের জন্য খুবই উপকারী।

থাইরয়েড থেকে মুক্তির জন্য ফলের উপকারিতা

থাইরয়েড গ্রন্থি শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হাইপোথাইরয়েডিজম এবং হাইপারথাইরয়েডিজম এই দুটি সমস্যা সাধারণ। যদিও এগুলো পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়, তবে কিছু খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন এবং জীবনযাত্রার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বিশেষ করে কিছু ফলের মাধ্যমে থাইরয়েড স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা পাওয়া যায়।

ফলের তালিকা ও উপকারিতা:

বেরি:

    • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা থাইরয়েড গ্রন্থির জন্য উপকারী।
    • ফ্রি র‌্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে এবং হরমোনের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।

    আপেল:

      • ভিটামিন এবং খনিজে সমৃদ্ধ, যা থাইরয়েডকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
      • কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

      কমলা:

        • ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা কোষকে রক্ষা করে।
        • প্রদাহ কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

        আনারস:

          • প্রচুর ভিটামিন সি এবং ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে, যা ফ্রি র‌্যাডিকেলের ক্ষতি রোধ করে।
          • ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে, যা থাইরয়েডের অন্যতম লক্ষণ।

          অ্যাভোকাডো:

            • স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন ক, ফোলেট, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সমৃদ্ধ।
            • থাইরয়েড স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক।

            থাইরয়েড সমস্যার চিকিৎসার জন্য কোনো প্রকার খাদ্য পরিবর্তন বা জীবনযাত্রার পরিবর্তন করার আগে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।

            থাইরয়েড থেকে মুক্তির জন্য এড়িয়ে চলতে হবে এমন খাবার

            থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা বজায় রাখতে কিছু খাবার পরিহার করা জরুরি। এই খাবারগুলো গাইট্রোজেন সমৃদ্ধ এবং থাইরয়েডের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

            সয়াবিন:

              • গবেষণায় দেখা গেছে, সয়া থাইরয়েড ওষুধের শোষণে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

              কফি:

                • বিশেষ করে ভোরে কফির পরিমাণ সীমিত করুন। কফি থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

                ক্রুসিফেরাস সবজি:

                  • বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি ইত্যাদি সবজি অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে সমস্যা হতে পারে।

                  অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার:

                    • চিনি ও চিনিযুক্ত খাবার ওজন বৃদ্ধি করতে পারে এবং এতে কোন পুষ্টি উপাদান নেই।

                    প্রক্রিয়াজাত খাবার:

                      • স্ন্যাকস, বিস্কুট, এবং হিমায়িত খাবার সাধারণত উচ্চ সোডিয়াম সমৃদ্ধ এবং এগুলো এড়ানো উচিত।

                      দুগ্ধজাত দ্রব্য:

                        • দুধ, পনির, দই এবং মাখন থাইরয়েডের হরমোনের ভারসাম্যকে পরিবর্তন করতে পারে, তাই এগুলো পরিহার করুন।

                        এই খাবারগুলো এড়িয়ে চললে থাইরয়েড সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া সবসময় গুরুত্বপূর্ণ।

                        Related Articles

                        Back to top button
                        error: