মুখের রূপচর্চা, পিল অফ মাস্ক ব্যবহারের নিয়ম, রূপচর্চায় দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার, কফি পাউডার দিয়ে রূপচর্চা, হলুদের ফেসপ্যাক, কলার ফেসপ্যাক, ত্বকের যত্নে আলুর ফেসপ্যাক, রাইস ফেস প্যাক .
ত্বকের সমস্যা নিরাময়ে নিয়মিত রপচর্চা অপরিহার্য। জানেন কি মিষ্টিকুমড়া আপনার চেহারায় উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আন্তে পারে। স্বাদে গুণেও যেমন অনন্য মিষ্টি কুমড়ো তেমন রূপচর্চায়। জেনে নেই ত্বকের যত্নে মিষ্টিকুমড়ার ব্যবহার।
মিষ্টিকুমড়ার গুনাগুন
মিষ্টিকুমড়ায় রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই ও চার ধরনের ভিটামিন বি (নায়াসিন, ফোলেট, রিবোফ্লাভিন, বি সিক্স)। এছাড়াও আছে আলফা ও বিটা ক্যারোটিন এবং জিঙ্ক, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ উপাদান।
রূপচর্চায় মিষ্টিকুমড়া
এই সবজি সব ধরনের ত্বকের জন্যই উপযোগী। মিষ্টিকুমড়া ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ব্রণের সমস্যা দূর করে। একই সাথে সূর্যের আলো ও পরিবেশ দূষণের ফলে ত্বকের যে ক্ষতি হয় তা সারিয়ে তুলে মিষ্টি কুমড়ো। মুখের বলিরেখাও কমাতে পারে মিষ্টি কুমড়া।
রুপচর্চায় মিষ্টিকুমড়া মাস্ক:
শুষ্ক ত্বকের জন্য মিষ্টিকুমড়ার মাস্ক
এই মাস্ক তৈরিতে লাগবে-
- দুই চামচ মিষ্টিকুমড়োর পাল্প,
- আধা চামচ মধু,
- এক চামচ দুধ,
- দুই চামচ নারকেল তেল,
- এক চিমটি দারুচিনি গুঁড়ো দিয়ে
এই উপকরণ গুলো দিয়ে মাস্ক তৈরী করে তা ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখে রেখে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মিষ্টিকুমড়ার মাস্ক
- এক টেবিল চামচ মিষ্টিকুমড়ার পাল্প
- এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার
এই উপকরণ গুলো দিয়ে মাস্ক তৈরী করে তা ১০ থেকে ১৫ মিনিট মুখে রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ব্রণের সমস্যার জন্য মিষ্টিকুমড়ার মাস্ক
- এক চামচ মিষ্টিকুমড়ার পাল্প,
- দুই চামচ টক দই,
- আধা চামচ ওটসের গুঁড়ো,
- আধা চামচ মধু
- এক চিমটি দারুচিনিগুঁড়ো
এই উপকরণ গুলো দিয়ে মাস্ক তৈরী করে তা ১০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
বলিরেখা এবং ইউভি রশ্মিজনিত সমস্যার জন্য মিষ্টিকুমড়ার মাস্ক
- দুই টেবিল চামচ মিষ্টিকুমড়োর পাল্প,
- এক চামচ ডিমের সাদা অংশ,
- আধা চামচ লেবুর রস
- আধা চামচ মধু
এই উপকরণ গুলো দিয়ে মাস্ক তৈরী করে তা সপ্তাহে তিন দিন রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করুন।
মিষ্টিকুমড়ার বীজের তেল ত্বক এবং চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী, এবং আপনি সহজেই এটি বাড়িতে তৈরি করতে পারেন। এখানে চুল ও ত্বকের জন্য মিষ্টিকুমড়ার বীজের তেল ব্যবহার এবং তৈরির ধাপগুলো তুলে ধরা হলো:
মিষ্টিকুমড়ার বীজ থেকে তেল তৈরি করার প্রক্রিয়া:
- বীজ সংগ্রহ: পাকা মিষ্টিকুমড়া থেকে বীজ বের করে নিন। বীজের সঙ্গে লেগে থাকা কুমড়ার অংশ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
- বীজ শুকানো: বীজগুলো পরিষ্কার এবং শুকনো পাত্রে রেখে বাতাসে শুকিয়ে নিন। খেয়াল রাখুন, বীজ যেন কোনোভাবেই পানির সংস্পর্শে না আসে।
- তেল মেশানো: শুকিয়ে নেওয়া বীজের সাথে ২০০ গ্রাম জলপাই তেল মিশিয়ে নিন। বীজের পরিমাণ যদি ২০০ গ্রাম হয়, তেলও ২০০ গ্রাম নিবেন।
- তেল গরম করা: মৃদু আঁচে তেল ও বীজ জ্বাল দিন। মাঝে মাঝে নেড়ে দিন। তেল ফুটে উঠলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন।
- সংরক্ষণ: ঠান্ডা হয়ে গেলে তেল ছেঁকে কাচের বোতলে রেখে সংরক্ষণ করুন। এটি দুই মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।
মিষ্টিকুমড়ার বীজের তেলের উপকারিতা:
ত্বকের জন্য:
- ময়েশ্চারাইজার: ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে ময়েশ্চারাইজার হিসেবে প্রতিদিন গোসলের পর অথবা রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করতে পারেন।
- উজ্জ্বলতা বাড়াতে: মিষ্টিকুমড়ার তেল, গোলাপজল, এবং গ্লিসারিন মিশিয়ে তৈরি করা মিশ্রণ নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং তারুণ্য বজায় থাকে।
- ফেসপ্যাক: কলা, মধু, এবং গ্লিসারিনের সঙ্গে মিষ্টিকুমড়ার তেল মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং মসৃণতা বজায় রাখে।
চুলের জন্য:
- চুলপড়া কমাতে: তিলের তেলের সঙ্গে মিষ্টিকুমড়ার বীজের তেল মিশিয়ে চুলে মালিশ করলে চুলপড়া কমে যায় এবং চুল ঘন ও শক্তিশালী হয়।
খেয়াল রাখার বিষয়:
- বীজে কখনোই পানি লাগতে দেওয়া যাবে না।
- খুশকির সমস্যা থাকলে চুলে মিষ্টিকুমড়ার তেল ব্যবহার করবেন না।
এই ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি তেল চুল এবং ত্বকের যত্নে কার্যকর প্রাকৃতিক সমাধান হিসেবে কাজ করে।
ঘরোয়া রূপচর্চা, রাতের রূপচর্চা, সহজ রূপচর্চা, রূপচর্চা বিষয়ক টিপস, মুখ সুন্দর করার উপায়, প্রাকৃতিক রূপচর্চা, চেহারা সুন্দর করার ঘরোয়া উপায়, মধু দিয়ে রূপচর্চা