আল্লাহর ৯৯ নামের ফজিলত ও আমল বাংলা অর্থসহ। আল্লাহর ৯৯ নাম গুলোর ফজিলত অপরিসীম। আল্লাহ” শব্দটি উচ্চারণ করলেই মনে এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব হয়। পবিত্র কুরআন ও হাদিস মতে আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে। আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে এ সকল নামের মাধ্যমে তাঁর নিকট দোয়া প্রার্থনা করতে আদেশ করেছেন।
আল্লাহর ৯৯ নামের ফজিলত ও আমল, আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থ সহ ফজিলত pdf, আল্লাহর ৯৯ নামের তালিকা, আল্লাহর ৯৯টি নাম বাংলা অর্থসহ, আল্লাহর ৯৯ নামের ফজিলত pdf, আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলায়, আল্লাহর সিফাতি নামের আমল, আল্লাহর ৯৯ নাম মুখস্ত করার সহজ উপায়।
এছাড়াও সহীহ মুসলিম এ বর্ণিত – ‘যে ব্যক্তি ৯৯টি গুণবাচক নাম মুখস্থ করবে এবং সর্বদা পড়বে, সে অবশ্যই বেহেশতে প্রবেশ করবে|’
আল্লাহর ৯৯ নামের ফজিলত ও আমল
১. আল্লাহ (الله) – Allah
ফজিলত: যে ব্যক্তি রোজ এক হাজার বার ‘ইয়া আল্লাহ! পাঠ করবে, তার মন থেকে যাবতীয় সন্দেহ ও দ্বিধা দূরীভূত হয়ে যাবে এবং সে একীন ও দৃঢ়তা অর্জন করতে পারবে। কোন দূরারোগ্য রোগী যদি অত্যাধিক পরিমাণে ‘ইয়া আল্লাহ’ নিয়মিত পড়তে থাকে এবং পরে আরোগ্যের জন্য দোয়া করে, তা হলে সে রোগ মুক্তি লাভ করবে।
২. আর-রাহমানু (الرحمن) – অসীম দয়ালু, পরম করুণাময়, কল্যাণময়
ফজিলত: প্রত্যহ প্রতি নামাযের পরে একশ’বার এই নাম পাঠ করলে মন থেকে যাবতীয় কাঠিন্য ও অলসতা দূর হবে।
৩. আর-রাহীমু (الرحيم) – বড় মেহেরবান, অতি দয়ালু
ফজিলত: কেউ এ নাম প্রত্যহ নামাযান্তে একশ বার পাঠ করলে দুনিয়ার সমস্ত আপদ-বিপদ থেকে নিরাপদে থাকতে পারবে এবং সমস্ত মাখলুকাত তার প্রতি দয়ালু হয়ে যায়।
৪. আল-মালিকু (الملك) – সর্বকর্তৃত্বময়, অধিপতি, প্রকৃত বাদশা, মালিক
ফজিলত: যে ব্যক্তি প্রত্যহ ফজর বাদ ‘ইয়া মালিকু’ অধিক পরিমাণে পাঠ করবে, আল্লাহ পাক তাকে ধনী করবেন।
৫. আল-কুদ্দুস (القدوس) – নিষ্কলুষ, মন্দ থেকে মুক্ত, অতি পবিত্র
ফজিলত: যে ব্যক্তি প্রত্যহ জাওয়ালের (দুপুরের সূর্য ঢলে যাওয়ার) পরে এ পবিত্র নাম বেশি করে পাঠ করবে, তার অন্তর সমস্ত রূহানী ব্যাধি থেকে মুক্ত হয়ে যাবে।
৬. আস-সালামু (السلام) – নিরাপত্তা-দানকারী, শান্তি-দানকারী, ত্রাণকর্তা, ত্র“টিহীন, দোষমুক্ত
ফজিলত: যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে এ নাম পড়বে, সে সকল প্রকার বিপদ থেকে মুক্ত থাকবে। ১১৫ বার এ নাম পাঠ করে পীড়িত ব্যক্তির গায়ে ফুঁ দিলে আল্লাহ পাক তাকে শেফা দান করবেন।
৭. আল-মু’মিনু (المؤمن) – ঈমান ও নিরাপত্তাদানকারী, জামিনদার, সত্য ঘোষণাকারী
ফজিলত: আল্লাহর ৯৯ নাম এর মধ্যে যে ব্যক্তি কোন ভয়ের সময়ে ৬৩০ বার এ নাম পাঠ করবে, আল্লাহ তাকে সমস্ত ভয় ও ক্ষতি থেকে রক্ষা করবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর এ নাম পড়বে কিংবা লিখে সাথে রাখবে, আল্লাহ পাক তাকে জাহেরী-বাতেনী নিরাপত্তা দান করবেন।
৮. আল-মুহাইমিনু (المهيمن) – রক্ষাকারী, প্রতিপালনকারী, অভিভাবক
ফজিলত: যে ব্যক্তি গোসল করে দু’রাকাত নামায পড়ে আন্তরিক নিষ্ঠার সাথে ১০০ বার এ নাম পাঠ করবে, আল্লাহ তার জাহের-বাতেন পবিত্র করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি ১১৫ বার পাঠ করবে সে লুকানো জিনিসের কথা জানতে পারবে।
৯. আল-আজীজু (العزيز) – অপরাজেয়, পরাক্রমশালী, সর্বাধিক সম্মানিত, মহাসম্মানিত
ফজিলত: আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে যে ব্যক্তি ৪০ দিন ৪০ বার এ নাম পড়বে, আল্লাহ পাক তাকে শক্তিমান ও অন্যের অমুখাপেক্ষী করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি ফজরবাদ ৪১ বার পাঠ করবে, তার কারর উপর নির্ভর করতে হবে না এবং অপমানের পর সম্মান লাভ করবে।
১০. আল-জাব্বারু (العزيز) – সর্বাধিক পরাক্রমশালী, মহাপ্রতাপশালী, দুর্নিবার, অতীব মহিমান্বিত
ফজিলত: যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় ২২৬ বার এ নাম পড়বে, সে জালেমদের অত্যাচার ও পাশবিক নিষ্ঠুরতা থেকে নিরাপদে থাকবে। আর যে ব্যক্তি এ নাম রূপার আংটির উপর নকশা করিয়ে হাতে পরবে, মানুষ তাকে শ্রদ্ধা করে চলবে এবং তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে।
১১. আল-মুতাকাব্বিরু (المتكبر) – বড়ত্ব ও মহিমার অধিকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ, অহংকারী, গৌরবান্বিত
ফজিলত: আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে যে ব্যক্তি এ নাম বেশি পরিমাণে পড়বে, আল্লাহ তাকে লোকচক্ষে বড় ও সম্মানী করে রাখবেন। আর যদি প্রতি কাজের প্রথমে এ নাম অধিক মাত্রায় পড়তে থাকে, সে কাজে সফলতা লাভ করবে।
১২. ইয়া খালিকু (الخالق) – সৃষ্টিকর্তা
ফজিলত: যে ব্যক্তি একটানা ৭ সাত দিন পর্যন্ত একশ বার করে এ নাম পড়বে, সে সকল বিপদ থেকে মুক্তি পাবে। যে ব্যক্তি সর্বদা এ নাম পড়বে, আল্লাহ তার জন্য এমন একজন ফেরেশতা দেন, যে তার পক্ষ থেকে ইবাদত করতে থাকে এবং তার চেহারা উজ্জ্বল থাকে।
১৩. আল বারি’উ (البارئ) – প্রাণদানকারী
ফজিলত: কোন বন্ধ্যা স্ত্রী লোক যদি সাতদিন পর্যন্ত রোযা রাখে এবং পানি দ্বারা ইফতার করে একুশ বার (আল বারি’উল মুছা’ওয়িরু) পড়ে, তা হলে সে সন্তানবতী হবে।
১৪. আল মুছাওয়ি’রু (المصور) – সুরতদাতা, আকৃতি-দানকারী
ফজিলত: কোন বন্ধ্যা স্ত্রী লোক যদি সাতদিন পর্যন্ত রোযা রাখে এবং পানি দ্বারা ইফতার করে একুশ বার (আল বারি’উল মুছা’ওয়িরু) পড়ে, তা হলে সে সন্তানবতী হবে।
১৫. আল-গাফ্ফারু (الغفار) – ক্ষমাশীল ও আবৃতকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি জুমার নামাজের পর একশ বার এ নাম পাঠ করবে, তার ভিতর ক্ষমার চিহ্ন পরিলক্ষিত হতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি রোজ আছরের পরে (ইয়া গঅফ্ফারু গফির লী) পড়বে, সে ক্ষমাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দলভুক্ত হবে।
১৬. আল-কাহ্হারু (القهار) – সব কিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার মালিক
ফজিলত: আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে যে ব্যক্তি দুনিয়ার মহব্বতে অন্ধ হয়ে যায়, সে যদি বেশি মাত্রায় এ নাম পাঠ করে, তা হলে তার দুনিয়ার মহব্বত কমতে থাকবে এবং আল্লাহর মহব্বত বৃদ্ধি পাবে।
১৭. আল-ওয়াহ্হাবু (الوهاب) – সবকিছুর দাতা
ফজিলত: যে ব্যক্তি অনাহার ও দারিদ্রের মধ্যে দিন কাটায়, সে যদি এ নাম পাঠ করে কিংবা লিখে সাথে রাখে, অথবা চাশত নামাজের শেষ সেজদায় চল্লিশ বার পড়ে, তা হলে আল্লাহ তার অভাব দূর করে দেবেন। তা দেখে মানুষ হতবাক হয়ে যাবে। আর সে যদি কোন বিশেষ অভাবে পতিত হয় তা হলে যেন ঘর বা মসজিদের আঙ্গিনায় তিন বা সেজদা করে হাত উঠিয়ে একশ বার এ না পড়ে, তা হলে উক্ত অভাব থেকে মুক্তি লাভ করবে।
১৮. আর-রাজ্জাকু (الرزاق) – মহান রুজিদাতা
ফজিলত: যে ব্যক্তি ফজরের নামাজের পূর্বে ঘরের চার কোণায় ১০/১০ বার করে এ নাম পড়ে ফুঁ দিবে, তার রিজিকের দুয়ার আল্লাহ পাক খুলে দিবেন; তার গ্রহে রোগ-ব্যাধি, অভাব-অনটন কখনও প্রবেশ করবে না। গৃহের ডান কোণ থেকে ফুঁ দেয়া শুরু করবে এবং মুখ কেবলার দিকে রাখবে।
১৯. আল-ফাত্তাহু (الفتاح) – মহান বিপদ দূরকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি ফজরের নামাজের পর উভয় হাত বুকের উপর বেঁধে সত্তর বার এ নাম পাঠ করবে, তার অন্ত ইমানের নূরে দীপ্তিমান হয়ে থাকবে।
২০. আল-আলীমু (العليم) – বহু প্রশস্ত জ্ঞানের অধিকারী
ফজিলত: আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে যে ব্যক্তি এ নাম বেশি বেশি পাঠ করবে, তার নিকট আল্লাহ তা’আলা ইলম ও মা’রেফাতের দরজা খুলে দিবেন।
২১. আল-কাবিযু (القابض) – রুজি সংকীর্ণকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি রুটির চার লোকমার উপর এ নাম লেখে চল্লিশ দিন পর্যন্ত আহার করবে, সে ব্যক্তি ক্ষুধা তৃষ্ণা, জখম যন্ত্রণা ইত্যাদির কষ্ট থেকে মুক্ত থাকবে।
২২. আল-বাসিতু (الباسط) – রুজি বৃদ্ধিকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি চাশতের নামাযের পর আসমানের দিকে হাত তুলে রোজ দশ বার এ নাম পড়বে এবং মুখমন্ডলে হাত ফিরাবে, আল্লাহ তাকে ধনী করে দেবেন, সে আর অন্যের মুখাপেক্ষী হবে না।
২৩. আল-খাফিযু (الخافض) – অবনতকারী
ফজিলত: আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে যে ব্যক্তি রোজ পাঁচশ বার এ নাম পড়বে, আল্লাহ পাক তার অভাব অনটন পূরণ করে দেবেন, যাবতীয় মুশকিল দূরে করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি ৩টি রোযা রাখবে এবং ৪র্থ এক জায়গায় বসে সত্তর বার এ নাম পড়বে, সে শত্র“র বিরুদ্ধে জয়লাভ করবে।
২৪. আর-রাফি’উ (الرافع) – উচ্চে স্থাপনকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি প্রতি মাসের চৌদ্দই রাত্রের অর্ধেক রাত্রে একশবার এ নাম পড়বে আল্লাহ তাকে মাখলুক থেকে অমুখাপেক্ষী এবং ধনী বানিয়ে দেবেন।
২৫. আল-মু’ইজ্জু (المعز) – সম্মানদাতা
ফজিলত: আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে যে ব্যক্তি সোমবার বা শুক্রবার মাগরিবের নামাযের পরে চল্লিশ বার এ নাম পাঠ করবে, আল্লাহ পাক তাকে মানুষের নিকট সম্মানী ও প্রতাপশালী বানিয়ে দেবেন।
২৬. আল-মুযিল্লু (المذل) – অবমাননাকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি পঁচাত্তর বার ইয়া মুযিল্লু পাঠ করে সেজদার মত নত করে আল্লাহর নিকট দোয়া করবে, আল্লাহ পাক তাকে হিংসুক, জালেম এবং শত্র“দের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন। যদি কোন খাস শত্র“ থাকে তা হলে সেজদায় তার নাম নিয়ে এরূপ দোয়া করবে, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে অমুকের অনিষ্ট থেকে রক্ষা কর।, আল্লাহ এ দোয়া কবুল করবেন।
২৭. আস-সামী’উ (السميع) – সবকিছু শ্রবণকারী
ফজিলত: আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে যে ব্যক্তি বৃহস্পতিবার চাশতের নামাযের পর পাঁচশ, অথবা একশ কিংবা পঞ্চাশ বার ‘ইয়া সামী’উ নামটি পাঠ করবে, তার দোয়া আল্লাহ পাক কবুল করবেন। এ নাম পাঠ করার মাঝে কারুর সাথে কোন কথা বলবে না। আর যে ব্যক্তি বৃহস্পতিবার ফজরের সুন্নত ও ফরযের মাঝে এ নাম একশ বার পাঠ করবে, আল্লাহ পাক তার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দান করবেন।
২৮. আল-বাছিরু (البصير) – সবকিছুর দর্শক
ফজিলত: যে ব্যক্তি জুমার নামাযের পর আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে একশবার এ নাম পাঠ করবে, আল্লাহ তা’য়ালা তার দৃষ্টিতে জ্যোতি এবং অন্তরে নূর পয়দা করে দিবেন।
২৯. আল-হাকামু (الحكم) – অটল বিচারক, মহা বিচারপতি, চুড়ান্ত হুকুমদাতা, হুকুমদাতা
ফজিলত: যে ব্যক্তি শেষ রাত্রে অযু অবস্থায় নিরানব্বই বার এ নাম পাঠ করবে, আল্লাহ পাক তার অন্তরকে ভেদ ও নূর দ্বারা ভরে দিবেন। আর যে ব্যক্তি জুমার রাতে এ নাম পড়তে পড়তে প্রায় জ্ঞানহারা হয়ে যাবে, আল্লাহ পাক তার কলবে ‘এলহাম’ দান করবেন।
৩০. আল-আদলু (العدل) – পরিপূর্ণ ইনসাফকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি জুমার দিন বা জুমার রাত্রে রুটির বিশখানি টুকরার উপর এ নাম লিখে আহার করবে, আল্লাহ পাক সমস্ত মাখলুককে তার অধীন করে দিবেন।
৩১. আল-লাতীফু (اللطيف) – পরম স্নেহশীল, সকল-গোপন-বিষয়ে-অবগত, সূক্ষ্মদর্শী
ফজিলত: আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে যে ব্যক্তি একশ তেত্রিশ বার ‘ইয়া লাতীফু’ পাঠ করবে, তার রিজিকে বরকত হবে এবং তার সমস্ত কাজই উত্তমরূপে সম্পন্ন হবে। যে ব্যক্তি দারিদ্র্য ও অভাব অনটনের কষ্ট, অসহায় অবস্থায় দুঃখ কিংবা অন্য কোন প্রকার বিপদে পতিত হবে, সে উত্তম রূপে অযু করতঃ দুই রাকাত নামাজ পড়বে এবং নিজ মাকসুদের কথা স্মরণ করে একশ বার এই নাম পাঠ করবে, তার মাকসুদ পূর্ণ হবে।
৩২. আল-খাবিরু (الخبير) – মহাজ্ঞানী ও সতর্ক
ফজিলত: আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে যে ব্যক্তি সাত দিন পর্যন্ত এ নাম অধিক পরিমাণে পড়তে থাকবে, তার নিকট গোপন বিষয় উদঘাটিত হতে থাকবে। যে ব্যক্তি প্রবৃত্তির কামনা বা খাহেশাতে নফসানীর শিকার হবে, সে যেন এ নাম অধিক মাত্রায় পাঠ করতে থাকে, সে মুক্তি লাভ করবে।
৩৩. আল-হালিমু (الحليم) – মহা ধৈর্যশীল
ফজিলত: এ নাম কোন কাগজে লিখে তা পানিতে ভিজাবে এবং সেই পানি দ্বারা যা কিছু ধৌত করবে কিংবা কোন কিছুর উপর ছিটিয়ে দিবে, এতে করে তার উপর খায়র ও বরকত নাযিল হবে এবং যাবতীয় অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাবে।
৩৪. আল-‘আযিমু (العظيم) – অতীব মহান
ফজিলত: আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে যে ব্যক্তি এ নাম বেশি পরিমাণে পাঠ করতে থাকবে, সে অধিক পরিমাণে মান-মর্যাদা লাভ করবে।
৩৫. আল-গাফুরু (الغفور) – মহা ক্ষমাশীল
ফজিলত: যে ব্যক্তি এ নাম অধিক মাত্রায় পাঠ করবে তার সমস্ত দুঃখ কষ্ট দূরীভূত হবে। ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির মাঝে বরকত অবতীর্ণ হবে। হাদীস শরীফে আছে, যে ব্যক্তি সেজদার ভেতর (ইয়া রাব্বি গফির লী) তিন বার পাঠ করবে, আল্লাহ পাক তার পূর্বের ও পরের সমস্ত গোনাহ মার্জনা করে দেবেন।
৩৬. আশ-শাকুরু (الشكور) – মহমূল্যায়নকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি আর্থিক অনটন কিংবা অন্য কোন দুঃখ-বেদনা বা কষ্টের মাঝে পতিত হয়, সে আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে এ নাম প্রত্যহ একচল্লিশ বার পাঠ করলে, তা থেকে মুক্তি লাভ করবে।
৩৭. আল-আলিয়্যু (العلي) – সর্বোচ্চ
ফজিলত: যে ব্যক্তি এ নাম সর্বদা পাঠ করবে এবং লিখে নিজের কাছে রাখবে, সে অত্যন্ত সম্মান, স্বাচ্ছন্দ্য ও সফল হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করবে
৩৮. আল-কাবীরু (الكبير) – অতীব মহান
ফজিলত: যে ব্যক্তি চাকুরিচ্যুত হয়, সে সাতটি রোযা রাখবে এবং প্রত্যহ এক হাজার বার (ইয়া কাবীরু) পাঠ করবে। সে চাকরিতে পুনর্বহাল হবে এবং সম্মানিত হবে।
৩৯. আল-হাফিযু (الحفيظ) – সকলের হেফাজতকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি অনেক পরিমাণে (ইয়া হাফীযু) পাঠ করবে এবং লিখে নিজের কাছে রাখবে, সে, অবশ্যই সকল প্রকার ভয়-ভীতি ও বিপদের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
৪০. আল-মুকিতু (المقيت) – সকলের রুজি ও সামর্থদানকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি কোন খালি পাত্রে সাত বার এ নাম পাঠ করে ফুঁ দিয়ে নিজে তাতে পানি পান করবে, কিংবা অন্যকে পান করাবে অথবা তা শুঁকবে, তার মাকসুদ পূর্ণ হবে।
৪১. আল হাসীবু (الحسيب) – সকলের পর্যাপ্ততাদানকারী
ফজিলত: যে কোন ব্যক্তি বা জিনিষের ভয়ে ভীত হবে সে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে আট দিন পর্যন্ত সকাল সন্ধ্যায় সত্তর বার করে (হাসবিয়াল্লাহুল হাসীবু) পাঠ করবে, সে সকল জিনিষের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকবে।
৪২. আল জালীলু (الجليل) – মহিমান্নিত
ফজিলত: যে ব্যক্তি মেশক ও জাফরান দ্বারা এ নাম লিখে নিজের কাছে রাখবে এবং অধিক পরিমাণে (ইয়া জালীলু) পাঠ করতে করতে শয়ন করবে, আল্লাহ তাকে আলেম, ছালেহ (নেককার) লোকদের মধ্যে সম্মান দান করবেন।
৪৩. আল-কারিমু (الكريم) – মহান দাতা
ফজিলত: যে ব্যক্তি রোজ শোয়ার সময় ‘ইয়া কারীমু’ পাঠ করতে করতে শয়ন করবে, আল্লাহ তাকে আলেম, ছালেহ (নেককার) লোকদের মধ্যে সম্মান দান করবেন।
৪৪. আল-রাকীবু (الرقيب) – মহান অভিভাবক
ফজিলত: যে ব্যক্তি নিজ পরিবার-পরিজন এবং মাল-সম্পদের উপর সাত বার এ নাম পড়ে ফুঁ দেবে এবং রোজ এরূপ করবে, আর ইয়া রাকীবু অজীফা করে নেবে, সে সমস্ত বিপদ থেকে নিরাপদ থাকবে।
৪৫. আল-মুজীবু (المجيب) – দোয়া শ্রবণকারী ও মঞ্জুরকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে ‘ইয়া মুজীবু’ পাঠ করবে, তার দোয়া আল্লাহ পাক কবুল করতে থাকবেন।
৪৬. আল-ওয়াসি’উ (الواسع) – প্রশস্ততার অধিকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি বেশি পরিমাণে ‘ইয়া ওয়াসি’উ পাঠ করতে থাকবে, তাকে আল্লাহ তা’আলা প্রকাশ্য ও গুপ্ত ঐশ্বর্য দান করবেন।
৪৭. আল-হাকীমু (الحكيم) – মহা হেকমতের মালিক
ফজিলত: যে ব্যক্তি অধিক মাত্রায় ‘ইয়া হাকিমু’ নাম পাঠ করবে, আল্লাহ পাক তার নিকট ইলম ও হেকমতের দরজা খুলে দেবেন। যে ব্যক্তির কোন কাজ পুরো হতে চায় না, সে যদি এ নাম নিয়মিতভাবে পড়তে থাকে, তা হলে তার সেই কাজ পুরো হয়ে যাবে।
৪৮. আল-ওয়াদুদু (الودود) – বড় স্নেহশীল
ফজিলত: যে ব্যক্তি এক হাজার বার ‘ইয়া ওয়াদুদু’ পাঠ করে খাদ্য দ্রব্যের উপর দম করবে এবং স্ত্রীর সংগে বসে আহার করবে, তা হলে, স্বামী-স্ত্রীর কলহ বন্ধ হয়ে যাবে এবং পারস্পারিক ভালবাসা বৃদ্ধি পাবে।
৪৯. আল-মাজীদু (المجيد) – মহা গৌরবমন্ডিত
ফজিলত: যে ব্যক্তি কোন কষ্টদায়ক ব্যাধি, যথা গনোরিয়া, কুষ্ঠ ইত্যাদি দ্বারা আক্রান্ত হবে, সে ১৩ই, ১৪ই ও ১৫ই তারিখ রোযা রাখবে এবং ইফতারের পরে অধিক পরিমাণে এ নাম পাঠ করে পানিতে দম করে পান করবে,, এতে করে সে আরোগ্য লাভ করবে।
৫০. আল-বাইছু (الباعث) – মৃতকে জীবনদানকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি রোজ শোয়ার সময়ে সিনার উপর হাত রেখে একশ একবার ‘ইয়া বা’ইছু পাঠ করবে, তার অন্তর ইলম ও হেকমত দ্বারা পরিপূর্ণ হবে।
৫১. আশ-শাহীদু (الشهيد) – উপস্থিত ও দর্শক
ফজিলত: যার স্ত্রী বা সন্তান-সন্ততি অবাধ্য, সে তাদের কপালের উপর হাত রেখে (অতি ভোরে) একুশ বার ‘ইয়া শাহীদু’ পাঠ করে দম করবে, এতে করে অবাধ্য বাধ্যগত হবে।
৫২. আল-হাক্ক (الحق) – হক ও অবিচল
ফজিলত: যে ব্যক্তি চার কোণ বিশিষ্ট কাগজের প্রতি কোণায় ‘আল-হাক্কু’ লেখে সেহরীর সময় কাগজখানি হাতের তালুতে রেখে আকাশের দিকে উঁচু করে দোয়া করবে, সে হারানো ব্যক্তি বা মাল পেয়ে যাবে এবং ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকবে।
৫৩. আল-ওয়াকীলু (الوكيل) – মহান কার্য সম্পাদনকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি আসমানী বিপদের আশংকায় ভীত হয়ে পড়বে, সে যেন বেশি মাত্রায় ‘ইয়া ওয়াকীলু’ পাঠ করতে থাকে এবং এ নামকেই তার উকিল বানিয়ে নেয়, এতে করে সে বিপদ থেকে মুক্ত থাকবে।
৫৪. আল-কাবিয়্যু (القوي) – মহাশক্তিমান
ফজিলত: যে ব্যক্তি বাস্তবেই মজলুম, দুর্বল এবং সবদিক থেকে অক্ষম ও পরাভূত, সে যেন জালেমকে ঠেকাবার জন্য এ নাম বার বার পাঠ করে। এতে করে সে নিরাপদে থাকবে। কিন্তু সাবধান! এ আমল যেন খামাখা করা না হয়।
৫৫. আল-মাতিনু (المتين) – কঠিন শক্তিধর
ফজিলত: যে মহিলার দুধ হয় না তাকে নামটি কাগজের উপর লিখে তার ধোয়া পানি পান করালে ইশাআল্লাহ্ তার খুব দুধ হবে।
৫৬. আল-অলীয়্যু (الولي) – সহানুভূতিশীল, সাহায্যকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর অভ্যাস, চাল-চলন ও কথাবার্তায় খুশি হতে পারছে না, সে যখন তার সামনে যাবে তখন এ নাম পাঠ করবে, তার স্বভাব সুন্দর হয়ে উঠবে।
৫৭. আল-হামীদু (الحميد) – প্রশংসার যোগ্য
ফজিলত: যে ব্যক্তি একটানা পঁয়তাল্লিশ দিন পর্যন্ত নিয়মিতভাবে একা একা তিরানব্বই বার এ নাম পাঠ করবে, তার মন্দ স্বভাবগুলো দূরীভূত হবে।
৫৮. আল-মুহ্ছী (المحصي) – স্বীয় জ্ঞান ও গণনায় রক্ষাকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি বিশু টুকরা রুটির উপর প্রত্যহ বিশ বার এ নাম পাঠ করে দম করবে এবং আহার করবে, সমস্ত মাখলুক তার কথা মানতে শুরু করবে।
৫৯. আল-মুবদি’উ (المبدئ) – প্রথম সৃষ্টিকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি সেহরীর সময় গর্ভবতী নারীর পেটের উপর হাত রেখে নিরানব্বই বার ‘ইয়া মুবদি’উ নাম পাঠ করবে, তার গর্ভপাত এবং নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে সন্তান প্রসব হবে না।
৬০. আল-মুঈদু (المعيد) – দ্বিতীয় বার সৃষ্টিকারী
ফজিলত: কোন হারানো ব্যক্তিকে ফিরে পেতে হলে যখন ঘরের সবাই শুয়ে পড়বে, তখন ঘরের চার কোণায় সত্তর বার করে ‘ইয়া মু’ঈদু’ নাম পাঠ করবে, সাত দিনের মধ্যে সে ব্যক্তি ফিরে আসবে কিংবা কোথায় কিভাবে আছে তা জানা যাবে।
৬১. আল-মুহ্য়ী (المحيي) – জীবনদানকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি রোগগ্রস্থ সে অধিক পরিমাণ এ নাম পড়তে থাকবে কিংবা অন্য কোন রুগ্ন ব্যক্তির গায়ে দম করবে, সে সুস্থ হয়ে উঠবে। যে ব্যক্তি নিরানব্বই বার ‘আল মুহ্য়ী’ পাঠ করে নিজের গায়ে দম করবে, সে যাবতীয় বাধা-বন্ধক বা বন্দী অবস্থা থেকে নিরাপদে থাকবে।
৬২. আল-মুমীতু (المميت) – মৃত্যুদানকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তির নফস বা প্রবৃত্তি তার নিয়ন্ত্রণে থাকে না, শোয়ার সময় সিনার উপর হাত রেখে পাঠ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়বে। এতে করে তার প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রিত হবে।
৬৩. আল-হাইয়্যু (الحي) – চিরজীবন্ত
ফজিলত: যে ব্যক্তি প্রত্যহ তিন হাজার বার (আল-হাইয়্যু) পাঠ করতে থাকবে, সে কখনও রোগগ্রস্থ হবে না। যে ব্যক্তি এ নাম চীনা বরতনের উপর মেশক ও গোলাপ পানি দিয়ে লিখে মিঠা পানিতে ধুয়ে পান করবে, কিংবা অন্য কোন রুগ্ন ব্যক্তিকে পান করাবে, পূর্ণ আরোগ্য লাভ করবে।
৬৪. আল-কাইয়্যুম (القيوم) – সবার রক্ষাকর্তা ও পরিচালক
ফজিলত: যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে (আল-কাইয়্যুম) পাঠ করতে থাকবে, মানুষের মধ্যে তার ইজ্জত সম্মান বেড়ে যাবে। যদি কেউ নির্জনে একা একা এ নাম পাঠ করে, তা হলে সে সচ্ছল হয়ে উঠবে। যে ব্যক্তি ফজর বা সূর্যদয় পর্যন্ত (ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম) পাঠ করতে থাকবে, তার অবসাদ অলসতা দূর হয়ে যাবে।
৬৫. আল-ওয়াজিদু (الواجد) – সবকিছু পাওয়ার অধিকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি আহারের সময় ‘ইয়া ওয়াজিদু’ নাম পাঠ করবে, তার খাদ্য কলবের শক্তি সামর্থ্য ও নূর বাড়িয়ে দিবে।
৬৬. আল-মাজিদু (المحيط) – শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্বের অধিকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি একা একা এ নাম পাঠ করতে করতে আত্মহত্যা হয়ে পড়বে, তার কলবে আল্লাহর নূর প্রকাশিত হতে থাকবে।
৬৭. আল-ওয়াহেদুল আহাদু (الواحد) – এক ও একক
ফজিলত: যে ব্যক্তি রোজ এক হাজার বার ‘আল ওয়াহেদুল আহাদু’ পাঠ করতে থাকবে, তার অন্তর থেকে মাখলুকের ভয় কিংবা ভালোবাসা দূর হয়ে যাবে। যে ব্যক্তির সন্তান হয় না সে যদি এ নাম লেখে নিজের সংগে রাখে, তা হলে তার নেককার সন্তান নসীব হবে।
৬৮. আস-সামাদু (الصمد) – অমুখাপেক্ষী
ফজিলত: যে ব্যক্তি সেহরীর সময়ে সেজদায় গিয়ে একশ পনের বা একশ পঁচিশ বার এ নাম পাঠ করবে, সে, জাহেরী বাতেনী সত্যতা লাভ করবে। যে ব্যক্তি অযু অবস্থায় এ নাম পড়তে থাকবে, সে কখনও মাখলুকের মুখাপেক্ষা হবে না।
৬৯. আল-কাদিরু (القادر) – শক্তিমান
ফজিলত: যে ব্যক্তি দু’রাকাত নামায পড়ে একশ বার (আল-কাদিরু) পাঠ করবে, আল্লাহ্ তার শত্র“কে লাঞ্ছিত অপদস্থ করে দেবেন। যদি কাউকে কোন কঠিন কাজ করতে হয় কিংবা তার কাজে কোন কঠিন বাধা এসে যায়, সে যেন একচল্লিশ বার ‘ইয়া কাদিরু’ পাঠ করে, তা হলে তার কাজ সহজ হয়ে যাবে কিংবা কঠিন বাধা অপসারিত হবে।
৭০. আল-মুকতাদিরু (المقتدر) – পূর্ণ শক্তির অধিকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি শোয়া হতে উঠার পর অধিক মাত্রায় (আল-মুকতাদিরু) পাঠ করতে থাকবে, অথবা কমপক্ষে বিশ বার পাঠ করবে, তার সমস্ত কাজই সহজ এবং সুসম্পন্ন হবে।
৭১. আল-মুকাদ্দিমু (المقدم) – প্রথমে এবং আগে সম্পাদনকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি যুদ্ধের সময় ‘আল মুকাদ্দিমু’ বেশি পরিমাণে পাঠ করতে থাকবে, আল্লাহ পাক তাকে অগ্রে থাকার তওফীক দান করবেন এবং শত্র“দের থেকে হেফাজতে রাখবেন। আর যে ব্যক্তি সদা সর্বদা এ নাম পাঠ করতে থাকবে, সে আল্লাহ্র অনুগত ও ফরমাবরদার হয়ে যাবে।
৭২. আল-মু’আখ্খিরু (المؤخر) – পশ্চাতে এবং পরে সম্পাদনকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে (আল-মু’আখ্খিরু) পাঠ করতে থাকবে, তার সত্যিকার তওবা নসীব হবে। যে ব্যক্তি প্রত্যহ নিয়মিতভাবে একশ বার এ নাম পড়বে, সে আল্লাহ পাকের নৈকট্য লাভ করবে, যে সে তা ছাড়া স্থির থাকতে পারবে না।
৭৩. আল-আউয়ালু (الأول) – সর্বপ্রথম
ফজিলত: যে ব্যক্তির কোন ছেলে হয় না, সে চল্লিশ দিন পর্যন্ত প্রত্যহ চল্লিশ বার (আল-আউয়ালু) পাঠ করবে, তার মকসুদ পূর্ণ হবে। যে ব্যক্তি মুসাফির, সে জুমার নি এক হাজার বার এ নাম পাঠ করলে অতি শীঘ্রই নির্বিঘেœ ও নিরাপদে বাড়ি ফিরতে সক্ষম হবে।
৭৪. আল-আখিরু (الأخر) – সর্বশেষ
ফজিলত: যে ব্যক্তি রোজ এক হাজার বার (আল-আখিরু) পাঠ করবে, তার অন্তর থেকে, গায়রুল্লাহ্র মহব্বত দূর হয়ে যাবে এবং সমগ্র জীবনের গোনাহ ও ত্র“টি বিচ্যুতির কাফফারা হবে। সর্বশেষে সে উত্তম মৃত্যু (হুসনে খাতেমা) বরণ করবে।
৭৫. আজ-জাহিরু (الظاهر) – প্রকাশ্য
ফজিলত: যে ব্যক্তি এশরাকের নামাযের পর পাঁচশ বার (আজ-জাহিরু) পাঠ করবে, আল্লাহ পাক তার চোখে রোশনী এবং অন্তরে নূর দান করবেন।
৭৬. আল-বাতিনু (الباطن) – গুপ্ত
ফজিলত: যে ব্যক্তি প্রত্যহ ৩৩ বার (ইয়া-বাতিনু) পাঠ করবে, তার নিকট গুপ্ত রহস্য প্রকাশিত হবে এবং তার অন্তরে আল্লাহর মহব্বত ও ভালবাসা সৃষ্টি হবে। যে ব্যক্তি দু’রাকাত নামায আদায় করে (হুয়াল আউয়ালু ওয়াল আখিরু ওয়াজজাহিরু ওয়াল বাতিনু ওয়া হুয়ু ‘আলা কুল্লিা শাইইন কাদীর) পাঠ করবে, তার সকল অভাব অনটন ও যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ হয়ে যাবে।
৭৭. আল-ওয়ালিউ (الوالي) – অভিভাবক
ফজিলত: যে ব্যক্তি অধিক মাত্রায় (আল-ওয়ালিউ) পাঠ করবে, সে আকস্মিক বিপদ থেকে নিরাপদে থাকবে। চীনা পাত্রে এ নাম লিখে তাতে পানি ভরে সেই পানি বাড়িতে ছিটিয়ে দিলে যাবতীয় আপদ-বিপদ থেকে মুক্ত থাকবে। কাউকে বশ করতে ইচ্ছা করলে এ নাম এগার বার পাঠ করবে। সে অনুগত হয়ে যাবে।
৭৮. আল-মুতা’আলী (المتعالي) – সবচেয়ে বুলন্দ ও উচ্চ
ফজিলত: যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে এই নাম পাঠ করবে, তার যাবতীয় সংকট দূরীভূত হয়ে যাবে। যে স্ত্রীলোক হায়েজ অবস্থায় এই নাম বেশী মাত্রায় পড়বে, তার কোন কষ্ট হবে না।
৭৯. আল-বাররু (البر) – চূড়ান্ত সদ্ব্যবহারকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি মদ্যপান, ব্যভিচার ইত্যাদির ন্যয় দুষ্কর্মে লিপ্ত, সে যদি প্রত্যহ সাত বার এই নাম পাঠ করে, তা হলে তার দুষ্কর্মের ইচ্ছা ও প্রবণতা দ্রুত কমে যাবে। যে ব্যক্তি দুনিয়ার মহব্বতে অন্ধ হয়ে যায়, সে যদি এ নাম অধিক মাত্রায় পাঠ করে, তা হলে দুনিয়ার মহব্বত ভালবাসা কমে যাবে। যে ব্যক্তি সন্তান পয়দা হওয়ার পরেই সাত বার এই নাম পড়ে দম করে আল্লাহর হাতে সোপর্দ করে দিবে, সে সন্তান বালেগ হওয়া পর্যন্ত যাবতীয় বিপদ-আপদ থেকে মুক্ত থাকবে।
৮০. আত-তাওয়াবু (التواب) – অধিক তওবা গ্রহণকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি চাশতের নামাযের পর তিনশ ষাট বার এ নাম পাঠ করবে, তার সত্যিকার তওবা নসীব হবে। যে ব্যক্তি বেশি পরিমাণে এ নাম পড়তে থাকবে, তার সমস্ত কাজ সহজ হবে। যদি কোন জালেমের উপর এ নাম দশ বার পড়ে দম করা হয়, তা হলে তার হাত থেকে নিস্তার লাভ করবে।
৮১. আল-মুনতাকিমু (المنتقم) – প্রতিশোধ গ্রহণকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি সত্যের উপর অবস্থানকারী, কিন্তু দুশমনের সাথে পেরে উঠছে না, সে যদি তিন জুমা পর্যন্ত বেশি পরিমাণে (ইয়া-মুনতাকিমু) নাম পাঠ করে, আল্লাহ স্বয়ং তার প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন।
৮২. আল-আফুও (العفو) – মহামার্জনাকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি বেশি মাত্রায় (আল-আফুও) পাঠ করতে থাকবে, আল্লাহ তার গোনাহসমূহ মার্জনা করে দিবেন।
৮৩. আল-রা’ফুউ (الرؤوف) – মহা স্নেহপরায়ণ
ফজিলত: যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে এ নাম পাঠ করতে থাকবে, সমস্ত মাখলুক তার প্রতি সদয় হবে এবং সেও মাখলুকের প্রতি স্নেহশীল হয়ে উঠবে। যে ব্যক্তি দশ বার দরূদ শরীফ এবং দশ বার এ নাম পাঠ করবে, তার গোস্সা দূরীভূত হবে। আর অন্য কোন ভীষণ রাগী ব্যক্তির উপর এ নাম পড়ে দম করলে তার রাগ চলে যাবে।
৮৪. মালিকুল (مالك الملك) – বাদশার বাদশা
ফজিলত: যে ব্যক্তি সর্বদা (ইয়া মলিকুল মুলক) পাঠ করবে, আল্লাহ তাকে ধনী এবং অন্য লোকদের অমুখাপেক্ষী করে দেবেন; সে কারুর প্রতি নির্ভরশীল থাকবে না।
৮৫. যুল জালালি ওয়াল ইকরাম (ذو الجلال والإكرام) – মহত্ত্ব ও নেয়ামতের মালিক
ফজিলত: যে ব্যক্তি বেশি পরিমাণে (ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম) পাঠ করবে, আল্লাহ পাক তাকে ইজ্জত সম্মান এবং মাখলুক থেকে অমুখাপেক্ষীতা দান করবেন।
৮৬. আল-মুকসিতু (المقسط) – আদল-ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি প্রত্যহ এ নাম পাঠ করবে, সে! শয়তানের কু প্ররোচনা (ওয়াসওয়াসা) থেকে নিরাপদে থাকবে। যদি কোন বৈধ ও খাস উদ্দেশ্যে সাত বার এ নাম পাঠ করে, তা হলে সে উদ্দেশ্য সফল হবে।
৮৭. আল-জামি’উ (الجامع) – সবাইকে একত্রকারী
ফজিলত: যে ব্যক্তি আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়, সে চাশতের সময় গোসল করবে এবং আসমানের দিকে মুখ করে দশ বার (ইয়া-জামি’উ) পাঠ করবে এবং একটি আঙ্গুল বন্ধ করতে থাকবে এবং সর্বশেষে উভয় হাত মুখের উপর ফিরাবে। এতে করে খুব শীঘ্রই তারা এক হয়ে আসবে।
বিপদ বা অশান্তিতে থাকলে এই আমলে মুক্তি মিলবে
৮৮. আল-গানিয়্যু (الغني) – বড় অভাবমুক্ত ও বেপরোয়া
ফজিলত: যে ব্যক্তি প্রত্যহ সত্তর বার (ইয়া গানিয়্যু) পাঠ করবে, আল্লাহ তার ধন-সম্পদে বরকত দান করবেন। সে কারুর মুখঅপেক্ষী হয়ে থাকবে না। যে ব্যক্তি কোন জাহেরী বাতেনী ব্যাধি কিংবা বালা-মসিবতে পতিত হবে সে ইয়া গানিয়্যু পাঠ করবে। তার সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং শরীরের উপর দম করলে মুক্তি পাবে।
৮৯. আল-মুগনী (المغني) – অভাবমুক্ত ও ধনী করা মালিক
ফজিলত: যে ব্যক্তি প্রথমে ও শেষে এগার বার দরূদ শরীফ পাঠ করে এগারশ এগার বার অজীফার মত এ নাম পাঠ করবে, আল্লাহ পাক তাকে জাহেরী বাতেনী ধন দান করবেন। ফজরের নামাযের পর কিংবা এশার নামাযের পরে পাঠ করবে। এর সাথে সূরা মুজ্জাম্মিলও তেলাওয়াত করবে।
৯০. আল-মানি’উ (المانع) – থামিয়ে দেয়ার অধিকারী
ফজিলত: যদি স্ত্রীর সাথে ঝগড়া কিংবা তিক্ততার সৃষ্টি হয়, তা হলে বিছানায় শোয়ার সময় দশ বার এ নাম পাঠ করবে, ফলে ঝগড়া ও মনোমালিন্যের অবসান হবে এবং পারস্পারিক মহব্বত বৃদ্ধি পাবে। যে ব্যক্তি বেশি বেশি এ নাম পড়বে, সে যাবতীয় ক্ষতি ও অনিষ্ট থেকে নিরাপদে থাকবে। যদি বিশেষ কোন বৈধ উদ্দেশ্যে এ নাম পাঠ করে তাও পূরণ হবে।
৯১. আয্-যর (الضار) – যন্ত্রনাদানকারী, ক্ষতিসাধনকারী, উৎপীড়নকারী
ফজিলত: প্রত্যেক শুক্রবার রাতে এ নাম ১০০ বার পড়লে সর্বপ্রকার বিপদ হতে রক্ষা হয়।
৯২. আন নাফিই’ ( ٱلْنَّافِعُ) – কল্যাণকারী
ফজিলত: মনের বাসনা লাভ করার ইচ্ছা থাকলে এ নাম মনে মনে পড়লে আশা পূরণ হয়। ব্যবসার উদ্দেশ্যে জিনিসপত্র কিনার সময় ৪১ বার এই নাম পড়লে ব্যবসা লাভবান হবে।
৯৩. আন নূর (ٱلْنُّورُ) – পরম আলো
ফজিলত: পৃথক-পৃথক অক্ষরে এই নাম লিখে এর ধোয়া পানি পেটের অসুখ কিংবা হৃদকম্প রোগীকে সেবন করালে আরোগ্য লাভ হয় এবং বেদনাস্থলে রাখলে বেদনা লাঘব হয়।
৯৪. আল হাদী (ٱلْهَادِي) – পথ প্রদর্শক
ফজিলত: এই নাম পাঠ করলে ভুল-ভ্রান্তি হতে মুক্ত থাকা যায়, জ্ঞান-বুদ্ধি ও দুরদরশিতা বৃদ্ধি পায়।
৯৫. আল বাদীই (ٱلْبَدِيعُ) – অতুলনীয়
ফজিলত: এই নাম ১০০০ বার পড়লে মনের বাসনা ও দুঃখ-কষ্ট লাঘব হয়।
৯৬. আল বাক্বী (ٱلْبَاقِي) – চিরস্থায়ী, অবিনশ্বর
ফজিলত: মনোযোগের সহিত এই নাম ১০০ বার পড়লে যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট লাঘব হয়।
৯৭. আল ওয়ারিস (لْوَارِثُ) – উত্তরাধিকারী
ফজিলত: মাগরিব ও এশার নামায এর ওয়াক্তের মধ্যবর্তী সময়ে ১০০০ বার এই নাম পাঠ করল মন হতে দুশ্চিন্তা, ভয় ও কষ্ট লাঘব হয়।
৯৮. আর রাশীদ (ٱلْرَّشِيدُ) – সঠিক পথ প্রদর্শক
ফজিলত: সর্বদা এশার নামাযের পর এ নাম ১০০ বার পড়লে সকল ধরনের ইবাদাত কবুল হয়।
৯৯. আস সাবুর (ٱلْصَّبُورُ) – অত্যাধিক ধর্য্য ধারণকারী
ফজিলত: প্রত্যহ সূর্যোদয়ের পূর্বে এ নাম ১০০ বার করে পড়লে আল্লাহর অসীম অনুগ্রহ লাভ হয় এবং বিপদ মুক্তি হয়।
আল্লাহর ৯৯ নামের কিছু আমল এখানে দেয়া হল- :
- একটি নির্দিষ্ট নাম জিকির করা। যেমন, একজন ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০ বার “আল্লাহ” নাম জিকির করতে পারেন।
- ফজিলতপূর্ণ কিছু নাম জিকির করা। যেমন, “আল-হাইয়্যু, আল-কাইয়্যুম্” একসাথে জিকির করলে মৃত্যু ভয় দূর হয়।
- দোয়ার মধ্যে আল্লাহর গুণবাচক নাম ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন, “আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিহামদিকা, ওয়া বিজাল্লালিকা, ওয়া বিকুল্লি ইসমিম মিন ইসমাইকা আল-আযিম”।
আল্লাহর ৯৯ নামের জিকির ও আমল প্রত্যেক মুসলমানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর ৯৯ নামের জিকির ও আমল করলে মানুষের জীবনে অফুরন্ত কল্যাণ ও সুফল লাভ হয়।