কৃষি

যেভাবে সহজেই আলু চাষ করবেন

সহজেই আলু চাষ! ধান ও গমের পরই আলুর স্থান। জেনে নিন আলু চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে।

মাটি নির্বাচন:

আলু যে কোনো মাটিতে চাষ করা যায়। বেলে দোআঁশ থেকে দোআঁশ মাটি আলু চাষের জন্য ভাল। সেচ ও নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা ও রৌদ্র উজ্জ্বল জমি নির্বাচন করতে হবে। মাটি ঝুরঝুরে করে প্রস্তুত করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন জমিতে বড় মাটির ঢেলা না থাকে।

বীজআলু শোধন:

কোল্ড স্টোরেজ থেকে বীজআলু বের করার পর ৪৮ ঘণ্টা প্রি হিটিং রুমে রাখতে হবে। বীজআলু বাড়িতে আনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বস্তা খুলে ছড়িয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে। তা না হলে বস্তা বন্ধ অবস্থায় ঘেমে পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত বিঘা প্রতি ২শ থেকে ২শ ১০ কেজি বীজআলু প্রয়োজন হয়।

রোপণ পদ্ধতি:

অঙ্কুর গজানোর পর ১ম কুঁড়িটি ভেঙে দিতে হবে ফলে অন্যান্য কুঁড়ি সমানভাবে বৃদ্ধির সুযোগ পায়। ৩০-৪০ গ্রাম ওজনের আস্ত আলু বীজ হিসেবে ভাল। আলু কেটেও বীজ লাগানো যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে যেন প্রতিটি কাটা অংশে কমপক্ষে ২টি কুঁড়ি থাকে। বীজ লাগানোর ২-৩ দিন আগে আলু কেটে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখলে কাটা অংশের ওপর পরা প্রলেপ মাটি বাহিত রোগ জীবাণু সহজে বীজে প্রবেশ করতে দেয় না। ১৫ কার্তিক থেকে ১৫ অগ্রহায়ণ অর্থাৎ নভেম্বর মাস আলু রোপণের উপযুক্ত সময়।

সার ব্যবস্থাপনা:

বিঘা প্রতি ইউরিয়া ৪৪-৪৮ কেজি, টিএসপি ২৭-৩০ কেজি, এমওপি ৩৩-৪০ কেজি, জিপসাম ১৩-১৬ কেজি, জিংক সালফেট ১ কেজি-১ কেজি ৩শ গ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ১৮-২০ কেজি, বোরন ৮শ গ্রাম-১ কেজি, গোবর ১২শ-১৩শ কেজি দিতে হবে।

আন্তঃপরিচর্যা :

বীজ রোপণের পর জমিতে ভালো রস না থাকলে সেচ দেয়া উত্তম। খেয়াল রাখতে হবে ক্ষেতে কোনোভাবেই পানি না দাঁড়ায়। ২-৩টি সেচ প্রয়োগ করা প্রয়োজন হতে পারে। আলু চাষ এর জমি সব সময় আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।

বীজআলুর জমিতে বিজাত বাছাই:

গাছের বয়স ৩০-৩৫ দিন থেকে শুরু করে ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত নিয়মিত আলুর জমিতে বিভিন্ন জাতের মিশ্রিত এবং রোগাক্রান্ত গাছ তুলে ফেলতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন রোগাক্রান্ত গাছ কোনোক্রমেই কোনো সুস্থ গাছের সঙ্গে না লাগে এবং হাতের স্পর্শ দ্বারাও যেন সুস্থ গাছে রোগ সংক্রমণ না হয়।

হামপুলিং:

হামপুলিং হলো গাছ টেনে উপড়ে ফেলা। হামপুলিংয়ের ৭-১০ দিন আগে থেকে সেচ বন্ধ করে দিতে হবে। হামপুলিংয়ের পর মাটি ও আলুর অবস্থার ওপর নির্ভর করে ৭-১০ দিন পর্যন্ত মাটির নিচে রেখে আলুর ত্বক শক্ত করতে হবে।

সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা:

আলু উঠানোর পর কড়া রৌদ্রে রাখা যাবে না। মাঠে প্রাথমিক বাছাইয়ের ক্ষতিগ্রস্ত আলু বাতিল করতে হবে।

Related Articles

Back to top button
error: