দৈনন্দিন জীবন

শবে বরাতের আমল, নামাজ, রোজা, গুরত্ব, ফজীলত, দোয়া 2024

শবে বরাতের ফজিলত, শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস, শবে বরাত কবে 2024, বরাত অর্থ কি, শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে, শবে বরাতের প্রমাণ, শবে বরাত কি ভাগ্য রজনী, শবে বরাতের ফজিলত আল কাউসার, শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস, শবে কদরের ফজিলত, শবে বরাতের ইতিহাস, শবে বরাত কি বিদআত, শবে বরাত সম্পর্কে কোরআন হাদিসের আলোচনা, শবে বরাত কবে 2024?

শবে বরাত কি?

শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে ‘শবে বরাত’ বলা হয়। শবে বরাত এসেছে ফারসি শব্দ থেকে। শব মানে রাত, বরাত মানে মুক্তি তাই শবে বরাত অর্থ মুক্তির যামিনী। ‘শবে বরাত’-এর আরবি অর্থ হলো ‘লাইলাতুল বারকাত’।

শবে বরাত কবে 2024?

আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ রবিবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত। শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে ‘শবে বরাত’ বলা হয়।

বিপদ বা অশান্তিতে থাকলে এই আমলে মুক্তি মিলবে

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে (ইবনে মাজাহ)। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ১৪ শাবান দিবাগত রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখ। কেননা, এদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন; কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি? আমি ক্ষমা করব; কোনো রিজিকপ্রার্থী আছ কি? আমি রিজিক দেব; আছ কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করব। এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৩৮৪)।

শবে বরাতে নফল নামাজের নিয়ম হলো, অন্য নফল নামাজের মতোই দুই রাকাত করে নামাজ পড়া। প্রতি রাকাতেই সুরা ফাতেহার পর পবিত্র কোরআনের যে কোনো সুরা পড়া। এরপর যথানিয়মে রুকু-সিজদা করা এবং অন্য রুকনগুলো আদায় করা। এভাবে দুই রাকাত নামাজ শেষ করা। 
দুই বা চার রাকাত নামাজ পড়ার পর কিছু সময় দোয়া-দরুদ, তাসবি-তাহলিল পড়া, জিকির করা, কোরআন তেলাওয়াত করা। এরপর আবার নামাজে দাঁড়ানো। নামাজের পর আবার জিকির-আজকার, কোরআন তেলাওয়াত, তাওবা-ইস্তেগফার করা, দীনি আলোচনা শোনা, কোরআন-হাদিসের ব্যাখ্যা পড়া ইত্যাদি। এভাবে সাধ্য অনুযায়ী যত রাকাত নামাজ পড়া যায় পড়তে পারেন। রাকাতেরও নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। 

নামাজ
নামাজ

শবে বরাতের রোজা কয়টি

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করো ও দিনে রোজা পালন করো। (সুনানে ইবনে মাজাহ)। এ ছাড়া প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামে বিজ-এর নফল রোজা তো রয়েছেই। যা আদি পিতা হজরত আদম (আ.) পালন করেছিলেন এবং আমাদের প্রিয় নবী (সা.)–ও পালন করতেন; যা মূলত সুন্নত। সুতরাং তিনটি রোজা রাখলেও শবে বরাতের রোজা এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। বিখ্যাত মুহাদ্দিস ফকিহ হাফিজ ইবনে রজব (রা.) বলেন, এদিনের রোজা আইয়ামে বিজ, অর্থাৎ চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজার অন্তর্ভুক্ত। (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ১৫১)।

শবে বরাতের আমল

১. নফল নামাজ পড়া

২. নামাজে কিরাআত ও রুকু-সেজদা দীর্ঘ করা।

৩. পরের দিন নফল রোজা রাখা;

৪. কোরআন তিলওয়াত করা

৫. দরুদ শরিফ বেশি বেশি পড়া;

৬. তাওবা-ইস্তিগফার অধিক পরিমাণে করা;

৭. দোয়া-কালাম, তাসবিহ তাহলিল, জিকির-আসকার ইত্যাদি করা;

৮. কবর জিয়ারত করা;

৯. নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সকল মোমিন মুসলমানের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা।

শবে বরাতের ফজীলত

হাদিস শরীফে এসেছে- ‘হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, পাঁচটি রাত এমন আছে, যে রাতে বান্দার কোনো দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। আর তা হলো-

জুমআর রাতের দোয়া, রজব মাসের প্রথম রাতের দোয়া, নিসফা শাবান তথা অর্ধ শাবানের রাতের দোয়া, ঈদুল ফিতর তথা রোজার ঈদের রাতের দোয়া, ঈদুল আজহা তথা কুরবানির ঈদের রাতের দোয়া।’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক)

তাই আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের জন্য নিচের দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে পারেন-

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি, ওয়া ওয়াসসি’লি ফি দারি, ওয়া বারিক লি রিজকি। (নাসাঈ)

অর্থ: হে আল্লাহ! আমার গোনাহ মাফ করে দাও। আমার জন্য আমার বাসস্থান প্রশস্ত করে দাও। এবং আমার রিজিকে বরকত দিয়ে দাও।

এ ছাড়া হযরত উমর ইবনু আব্দিল আযিয রহ., ইমাম শাফেয়ী রহ. প্রমুখ মনীষীদের থেকেও এ রাতের ইবাদতের সপক্ষে রেওয়ায়াত রয়েছে। অন্তত বারোজন সাহাবি থেকে শবেবরাতের ফজিলত সংক্রান্ত হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এখানে বিখ্যাত দুটি হাদিস তুলে ধরা হলো-

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, আল্লাহ তায়ালা শাবান মাসের মধ্যরজনীতে সমস্ত মাখলুকের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন এবং বিদ্বেষ পোষণকারী ও হত্যাকারী ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করে দেন [মুসনাদু আহমাদ, হাদিস নং ৬৬৪২]। অন্য বর্ণনায় রাসূল সা. বলেন, মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী [তাবারানি- হাদীস নং ২০৩]।

হযরত আয়শা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, এ রাতে আল্লাহ তায়ালা প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং কালব গোত্রের মেষপালের পশমের চাইতেও অধিক সংখ্যক লোকের গুনাহ মাফ করেন [ইবনু মাজাহ- হাদিস নং ১৩৮৯]।

মূল কথা এই যে, এসব রাত উৎসবের নয়, ইবাদত-বন্দেগী ও তওবা- ইস্তেগফারের রাত। তাই রসম-রেওয়াজের অনুগামী হয়ে এ রাতে উপরোক্ত কাজকর্মে লিপ্ত হওয়া নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করা ছাড়া আর কিছুই নয়।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে বরাতের মহিমান্বিত রাতে শরিয়তসম্মত পন্থায় ইবাদত বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সবশেষে

আমাদের আজকের ব্লগ আর্টিকেল শবে বরাতের আমল, নামাজ, রোজা, গুরত্ব, ফজীলত, দোয়া 2024 নিয়ে ছিল আপনাদের কাছে কেমন লাগলো? শবে বরাতের আমল, নামাজ, রোজা, গুরত্ব, ফজীলত, দোয়া 2024 জানার জন্য আমাদের এই পোষ্টটি আপনি পড়ে থাকলে আপনার অবশ্যই উপকারে আসবে তাই আশা করছি।

আপনাদের সুবিধার্তে কষ্ট করে শবে বরাতের আমল, নামাজ, রোজা, গুরত্ব, ফজীলত, দোয়া 2024 পোষ্ট করেছি। আপনি যদি আমাদের এই নিবন্ধিত পোষ্ট টি পুরো পড়ে থাকেন তাহলে আপনি শবে বরাতের আমল, নামাজ, রোজা, গুরত্ব, ফজীলত, দোয়া 2024 জেনে যাবেন।

ময়মনসিংহর সেরা সকল শবে বরাতের আমল, নামাজ, রোজা, গুরত্ব, ফজীলত, দোয়া 2024 জানতে এই ব্লগ টি পড়ুন নিয়মিত। আর আপনাদের ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন । সেই সাথে আমাদের এই মিনসাইটার সাইট কে বুকমার্ক করে রাখবেন , এর ফলে আপনি আমাদের সকল ধরনের এর প্রয়োজনীয় সকল আর্টিকেল গুলো আমাদের কাছ থেকে পেয়ে যাবেন।

FAQ

শবে বরাত কবে 2024?

আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ রবিবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত। শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে ‘শবে বরাত’ বলা হয়।

ট্যাগঃ শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস, শবে বরাতের ফজিলত আল কাউসার, শবে বরাতের নামাজের নিয়ম, শবে বরাতের রোজা কয়টি, শবে বরাত ২০২৩, শবে বরাতের রোজা কয়টি ২০২৩, শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস, শবে বরাতের ফজিলত আল কাউসার, শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস, শবে বরাতের নামাজের নিয়ম, শবে বরাত ২০২৩, শবে বরাতের রোজা কয়টি, শবে বরাতের রোজা কয়টি ২০২৩, শবে বরাত কবে

Related Articles

Back to top button
error: