২য় বার ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও চিকিৎসা, ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার ২০২৪, শিশুর ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার, ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার, ডেঙ্গু রোগের প্রতিরোধ, ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও কারণ, ডেঙ্গু জ্বর কত দিন থাকে.
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়, ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও প্রতিকার, ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় রচনা, ডেঙ্গু প্রতিরোধে খাবার, ডেঙ্গু নিয়ে প্রতিবেদন রচনা, ডেঙ্গু সচেতনতা প্রতিবেদন, ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের জন্য আবেদন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ পোস্টার, ডেঙ্গু সম্পর্কে প্রতিবেদন ২০২৩, ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার, ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে, ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ২০২৩, ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, ডেঙ্গু রোগের কারণ, ডেঙ্গু রোগের প্রতিরোধ, ডেঙ্গু সচেতনতা প্রতিবেদন,
ডেঙ্গু কি এবং প্রতিরোধে কি করবেন?
এটি একটি মশাবাহিত রোগ। এডিস মশা থেকে এই রোগের উৎপত্তি। সাধারণত মে থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেশি থাকে। শীতে এরা লার্ভা অবস্থায় বেঁচে থাকে যা বর্ষার শুরুতেই নতুন করে বিস্তার লাভ করে। গ্রামের তুলনায় সাধারণত শহরে অভিজাত এলাকায় এই মশার প্রাদুর্ভাব বেশি।
এই জ্বর থেকে বাঁচার জন্য সাধারণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যতটুকু সম্ভব গ্রহণ করুন। ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে ঘুমান। বিকাল-সন্ধ্যার দিকেই ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ করে দিন। মশানিরোধক এরোসল স্প্রে করুন ঘরের আনাচে কানাচে। ফুলের টব, কৌটা ইত্যাদি জায়গায় পানি জমে থাকলে সেগুলো পরিস্কার করুন।
ডেঙ্গুর প্রকোপ
এখনকার ডেঙ্গু জ্বরের যেই লক্ষণ নিয়ে এসেছে তার সাথে পুর্বের ডেঙ্গু জ্বরের কোন মিল নেই। এবারের ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর হারও বেশি এবাং প্রায় মহামারির দিকে ছুটে চলেছে। ধারনা করা হচ্ছে নতুন কোন শক্তিশালী স্ট্রেইনের ডেঙ্গু ভাইরাস এই জ্বরের জন্য দায়ী। হাসপাতালগুলোতেও প্রতিদিন নতুন রোগী এই জ্বর নিয়ে ভর্তি হচ্ছে। এখনকার ডেঙ্গু জ্বর খুব দ্রুত হার্ট, কিডনি, ব্রেইনকে আক্রান্ত করছে। প্লাজমা (রক্তের তরল অংশ) লিকেজ হয়ে রোগী দ্রুত শকে চলে যেতে পারে যা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে। এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত ৪২৪৭জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে জুন থেকে ১২ই জুলাই পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৩৬৪৭ জন।
ডেঙ্গু জ্বরে প্রাথমিক ভাবে কি করবেন ?
তীব্র জ্বর/ গা ব্যথা, চোখের পেছনদিকে ব্যথা, শরীরে চুলকানি বা র্যাশ, বমি, পেটে ব্যথা ইত্যাদি ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ। ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। ব্যথার জন্য শুধুমাত্র প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনরকম এন্টিবায়োটিক অথবা ব্যাথার ওষুধ সেবন করা যাবে না। এই রোগের একমাত্র চিকিৎসা হচ্ছে শরীরের পানির পরিমান ব্যালেন্স রাখা। প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে জ্বর হলে। ডেঙ্গু জ্বরে পাতলা পায়খানা হলে তা জটিলতা অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয় তাই অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। স্বাভাবিক মাত্রায় প্রস্রাব হচ্ছে কিনা আর ব্লাড প্রেশার ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বর জানতে পারলেই দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হউন কারণ এবারের ডেঙ্গু অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে ভয়াবহ। এবারের জ্বর আগের থেকে ভিন্য তাই জ্বর আসার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই নিকটস্থ হাসপাতাল থেকে CBC (Complete Blood Count) এবং Dengue NS1 antigen টেস্ট করবেন।
ডেঙ্গু সংক্রমণের কারণে রক্তের প্লাটিলেট ভেঙে যেতে থাকে। প্রচলিত গুজব অনুযায়ী পেপে পাতার রস খেলে রক্তের প্লাটিলেটের পরিমান বেড়ে যায় যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কোন ওষুধের মাধ্যমে প্লাটিলেটের পরিমান বাড়ে না। নির্দিষ্ট সময় পর আপনা-আপনিই প্লাটিলেট স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ত্বকে বয়সের ছাপ পরার কারন জেনে নিন! চামড়া ভাজ পড়ার কারণ
ডেঙ্গু জ্বর একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা এবং এর লক্ষণগুলি জানা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ এবং করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
ডেঙ্গুর লক্ষণসমূহ
জ্বর:
- সাধারণত ১০১-১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
- জ্বর একটানা থাকতে পারে বা পিরিয়ডিকভাবে আসতে পারে।
শরীরে ব্যথা:
- মাথাব্যথা, পিঠ ও শরীরের অন্যান্য অংশে ব্যথা।
চোখের পেছনে ব্যথা:
- চোখের পেছনে বা সোজা লালচে দাগ (র্যাশ)।
র্যাশ:
- চামড়ায় লালচে দাগ।
কি করতে হবে
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
- জ্বর হলে অবহেলা করবেন না। সাথে সাথে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, ডেঙ্গু জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি বা অন্যান্য উপসর্গ থাকলে তা অন্য কিছু হতে পারে, তবে জ্বর হলেও সতর্ক থাকুন।
বিশ্রাম:
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। দৈনন্দিন কাজকর্মের পরিমাণ কমিয়ে দিন এবং সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিশ্চিত করুন।
তরল খাবার গ্রহণ:
- ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস, খাবার স্যালাইন ইত্যাদি গ্রহণ করুন।
ঔষধ:
- প্যারাসিটামল: ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত প্যারাসিটামল খাওয়ার অনুমতি রয়েছে। তবে, দৃষ্টান্ত অনুযায়ী দিনে সর্বোচ্চ চারটি প্যারাসিটামল ট্যাবলেট গ্রহণ করা যেতে পারে।
- অ্যাসপিরিন: ডেঙ্গু জ্বরে অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ এটি রক্তক্ষরণ সৃষ্টি করতে পারে।
প্ল্যাটিলেট বা রক্তকণিকা নিয়ে চিন্তা
- প্ল্যাটিলেট কাউন্ট: ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে প্ল্যাটিলেট কাউন্টের পরিবর্তন নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বেগ না করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত। সাধারণত, প্ল্যাটিলেট কাউন্ট ১,৫০,০০০ থেকে ৪,৫০,০০০ এর মধ্যে থাকা উচিত।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া
- ক্যাটাগরি ‘এ’: সাধারণত জ্বর থাকে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয় না।
- ‘বি’: শরীরে কিছু লক্ষণ থাকে, যেমন পেটের ব্যথা, প্রচুর বমি, অথবা খাওয়ার সমস্যা। এই অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া উপকারী হতে পারে।
- ক্যাটাগরি ‘সি’: সবচেয়ে গুরুতর পরিস্থিতি, যেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ প্রয়োজন হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে, অবিলম্বে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন এবং ডেঙ্গু সম্পর্কিত সঠিক চিকিৎসা নিন। জ্বর, শরীরের ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, এবং চামড়ায় র্যাশ দেখা দিলে সতর্কতা অবলম্বন করুন এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম, তরল খাবার গ্রহণ করুন।
ডেঙ্গু জ্বরের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপুর্ণ, বিশেষ করে যখন এটি বিশেষ সময়ের মধ্যে (জুলাই থেকে অক্টোবর) বেশি দেখা যায়। ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে আপনার প্রশ্নের উত্তর এবং করণীয় বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানানো হলো:
কখন হাসপাতালে যেতে হবে
ডেঙ্গু জ্বরের ধরন বা ক্যাটাগরি অনুযায়ী চিকিৎসা এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরের তিনটি ক্যাটাগরি রয়েছে:
ক্যাটাগরি ‘এ’:
- সাধারণত শুধু জ্বর থাকে। অধিকাংশ ডেঙ্গু রোগী এই ক্যাটাগরির।
- হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়া যথেষ্ট।
ক্যাটাগরি ‘বি’:
- কিছু লক্ষণ যেমন পেটে ব্যথা, প্রচুর বমি, বা অন্যান্য জটিলতা থাকতে পারে।
- স্থূলতা, ডায়াবেটিস, অন্তঃসত্ত্বা, জন্মগত সমস্যা, কিডনি বা লিভারের সমস্যা থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ভালো।
ক্যাটাগরি ‘সি’:
- সবচেয়ে গুরুতর, যেখানে লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউয়ের প্রয়োজন হতে পারে।
বাড়িতে কী করবেন
বিশ্রাম:
- সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন।
তরল খাবার:
- প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার গ্রহণ করুন। যেমন, ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস, এবং খাবার স্যালাইন।
ঔষধ:
- প্যারাসিটামল: জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ আটটি প্যারাসিটামল গ্রহণ করা যেতে পারে, তবে লিভার, হার্ট বা কিডনি সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- অ্যাসপিরিন, ক্লোফেনাক, আইবুপ্রোফেন: এই ধরনের ঔষধ গ্রহণ করা উচিত নয় কারণ এগুলি রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
যা করবেন না
প্ল্যাটিলেট কাউন্ট নিয়ে উদ্বেগ:
- প্ল্যাটিলেট কাউন্ট খুব কম হলে বা রক্তপাত দেখা দিলে প্রয়োজনে প্ল্যাটিলেট বা রক্ত দেওয়া যেতে পারে। তবে সাধারণত, প্ল্যাটিলেট বাড়ানোর জন্য পেঁপে পাতা বা অন্যান্য প্রাকৃতিক চিকিৎসার কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
রক্তচাপ কমে যাওয়া:
- জ্বরের শেষের দিকে রক্তচাপ কমে যেতে পারে এবং মাড়ি, নাক, মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত হতে পারে। এই অবস্থায় স্যালাইন দেওয়া হতে পারে এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দরকার।
সবশেষে
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে, সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনার অবস্থার ওপর ভিত্তি করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রাথমিক লক্ষণ ও চিকিৎসার বিষয়ে সঠিক তথ্য জানলে ডেঙ্গু মোকাবিলা সহজ হবে।
যদি কোনো বিশেষ পরিস্থিতি বা লক্ষণ আপনার উদ্বেগ বাড়ায়, নিশ্চিতভাবেই চিকিৎসকের সাহায্য নিন।